করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তাদের সংস্পর্শে যারা থাকবেন বা যারা আক্রান্ত ব্যক্তির সেবা করবেন তাদের মাস্ক মাস্ক সরবরাহ করবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সোমবার (৯ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সোমবার আইইডিসিআরে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সবার মাস্ক ব্যবহার করার মতো পরিস্থিতি এখনো আমাদের দেশে তৈরি হয়নি। যারা আক্রান্ত হয়েছেন বা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন, শুধু তারা মাস্ক পরবেন।
করোনা প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সবাই প্রস্তুত আছেন, এ দাবি করে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের চোখ-কান খোলা আছে। প্রশাসনের সব বিভাগ প্রস্তুত আছে। জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিরা আমাদের সঙ্গে যুক্ত আছেন। আমার মনে হয়, মানুষের ভয়ের কোনো কারণ নেই।
ড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘যাদের মাস্ক পরা দরকার, তারা যাতে মাস্ক পান, সে উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। যারা চিকিৎসাসেবায় অংশ নেবেন, তাদের যাতে নিরাপত্তার অভাব না হয়, সেদিকে আমরা নজর দিয়েছি।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তের আগেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশকে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ধরনের ইকুইপমেন্ট সরবরাহ করেছিল। তবে তা পরিমাণে কম ছিল। তখন তারা আক্রান্ত দেশগুলোতেই বেশি বেশি সরবরাহ করেছে। বাংলাদেশে গতকাল করোনায় আক্রান্ত তিন ব্যক্তিকে শনাক্তের পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও দাতা সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। তারা সংশ্লিষ্ট ইকুইপমেন্ট সরবরাহ বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে।
এর আগে দুপুরে আইইডিসিআর মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি বলেছেন করোনায় আক্রান্ত তিন বাংলাদেশি সুস্থ আছেন। নতুন করে কেউ করোনায় আক্রান্ত হননি।
তিনি বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ করার নির্দেশনা দেইনি। কারণ, পরিস্থিতি এখনো সেরকম পর্যায়ে যায়নি। যেহেতু আমাদের ঝুঁকি কম, আপনারা এটা নিয়ে শঙ্কিত হবেন না। আমরা জানি, এটা নিয়ে উদ্বেগ হবে। আমরা দেশের জন্য ভাবি, সেজন্য এ উদ্বেগ। কিন্তু আতঙ্কিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি এখনো হয়নি।
বিশ্বে করোনা ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশে মাস্কের চাহিদা বাড়তে থাকে। এরইমধ্যে রোববার দেশে তিনজনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর এই চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ীরা বাড়িয়ে দিয়েছেন সব ধরনের মাস্কের দাম। যদিও চিকিৎসকরা বলছেন, সবার মাস্ক ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই।
উপমহাদেশের প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, এই ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় না। শুধু যারা সংক্রমিত হয়েছেন তাদের সংস্পর্শে গেলেই অন্যদের সংক্রমণের ভয় আছে। সংক্রমণের শিকার রোগীকেই শুধু মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়ানোর জন্য সুস্থ মানুষের মাস্ক ব্যবহারের দরকার নেই। অযথাই মানুষ মাস্ক কিনতে ছুটছেন। এ কারণে খামোখা শুধু দাম বেড়ে যাচ্ছে।
এমতাবস্থায় করোনাভাইরাস আতঙ্কে অপ্রোয়জনীয়ভাবে মাস্ক ব্যবহার না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।