শঙ্কা কাটিয়ে, টিকা উৎসবে মেতেছে গোলাপগঞ্জ উপজেলার মানুষ
16, February, 2021, 10:42:53:PM
গোলাপগঞ্জ(সিলেট) প্রতিনিধি : করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে সকল শঙ্কা কাটিয়ে এখন টিকা উৎসবে মেতেছে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার মানুষ। গোলাপগঞ্জে টিকা গ্রহীতাদের উপস্থিতি দিন দিন বেড়েই চলেছে। অনেক প্রবীণ স্বজনদের সঙ্গে এসে টিকা নিয়ে বলেছেন, প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে এখন নিরাপদ বোধ করছেন তারা। করোনাভাইরাস মোকাবেলার সম্মুখযোদ্ধাদের সঙ্গে বয়সে প্রবীণ, শিক্ষক, সাংবাদিক প্রায়ই সব শ্রেণির নাগরিকরা প্রথম দিকে টিকা পাচ্ছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দেয়া তথ্য মতে, গত ৭ ফেব্রæয়ারী থেকে মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রেæয়ারী) পর্যন্ত মোট টিকা নিয়েছেন ১৮শ ৪৩ জন। এর মধ্যে মঙ্গলবারে নিয়েছেন ২শ ৮৯ জন। রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত মোট রেজিস্ট্রেশন করেছেন ৪০০০ জন। বর্তমানে দুটি বুথে টিকা দেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনে পরবর্তীতে আরোও বৃদ্ধি করা হবে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে টিকা নিতে আসা ভাদেশ^র নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুনীল চন্দ্র দাশ বলেন, “টিকা নিয়ে নিজেকে অনেক হালকা লাগছে। মনে হচ্ছে, অনেক বড় একটা বোঝা নেমে গেল। কোনো টেনশনের কারণ নেই। কোনো ব্যাথাও পাইনি।”এখানে এসে দেখলাম সবাই সুশৃঙ্খলভাবে টিকা নিচ্ছে। অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি, ডায়াবেটিস রোগী টিকা নেওয়ায় মানুষের মাঝে ভয় ও জড়তা কেটে গেছে ভ্যাকসিন নেওয়ার পর বিশ্রামের ব্যবস্থা আছে।”
গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আরএমও ডা: শাহিন বলেন, “টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে বয়স কোনো বিষয় নয়। বয়স কিংবা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার চিন্তা না করে সবারই টিকা নেওয়া উচিত। একথা প্রমাণিত যে, প্রটেকশন দেবে, এটা নিশ্চিত। যাদের বয়স বেশি, তারাও সবার টিকার আওতায় আসা উচিত।”
গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে টিকা নিতে আসা গোলাপগঞ্জের প্রবীণ রাজনীাতাবিদ নুরুল আমিন লিলন বলেন, “ভেবেছিলাম টিকা দিলে কী যেন হয়। এই বয়সে আরও অনেক রোগ-ব্যাধি নিয়ে টিকা নেওয়া নিরাপদ হবে কি না? আসলে টিকা নেওয়ার পর ভালোই লাগছে। নিজের মধ্যে একটু সাহস পাচ্ছি। করোনা থেকে কিছুটা হলেও নিরাপদ মনে হচ্ছে।”
দুপুরে সাংবাদিক আজিজ খান টিকা নেন। সবাইকে টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে আজিজ খান বলেন, “করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য টিকার বিকল্প নেই। আমরা যারা সংবাদমাধ্যমে কাজ করি, তাদের টিকা নেওয়া জরুরি। টিকা নিতে হবে সবাইকেই। আমি টিকা নিলাম, আর আপনি নিলেন না, তাতে কিন্তু আমরা নিরাপদ ভাবতে পারি না।”
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মনিসর চৌধুরী জানান, প্রথম দিন থেকে টিকা গ্রহীতাদের উপস্থিতি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রেজিস্ট্রেশন করে টিকা কার্ড আনলেই তাদের এখান থেকে টিকা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরোও বলেন, প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত টিকাদান কার্যক্রম চলবে। সেই সাথে সবাইকে ভয় না পেয়ে রেজিস্ট্রেশন করে টিকা গ্রহণ করার জন্য আহবান জানান তিনি।