পঞ্চগড়ের সেই পুলিশ সদস্য সঙ্গীসহ কারাগারে পুলিশ কনস্টেবল ওমর ফারুক (বামে) ও এএসআই মোশাররফ হোসেন
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে আটক পুলিশ সদস্য ওমর ফারুকসহ চারজনের নামে মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
এই দুই পুলিশ সদস্য হলেন- পঞ্চগড় পুলিশ লাইন্সে কর্মরত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মোশাররফ হোসেন ও পুলিশ সদস্য ওমর ফারুক।
এর আগে সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে চারজনের নামে একটি মামলা করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন-সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঘাগড়া সীমান্তের মমিনপাড়া এলাকার আমিরুল ইসলাম (৪৫) ও মাসুদ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আমিরুল ইসলাম ওই সীমান্ত এলাকার একজন মাদক ব্যবসায়ী। তার বাড়ির পরই ভারতের সীমানা শুরু। পার্শ্ববর্তী ভারতের সিপাইপাড়া এলাকার মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে তার (আমিরুল ইসলাম) মাদক সম্পর্কিত যোগাযোগ রয়েছে।
পুলিশের এএসআই মোশাররফ হোসেন ও পুলিশ সদস্য ওমর ফারুক দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসায়ী আমিরুলের বাড়িতে যাতায়াত করতেন। রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এএসআই মোশাররফ হোসেন, পুলিশ সদস্য ওমর ফারুক, মমিনপাড়া এলাকার আমিরুল ইসলাম ও মাসুদ নামের এক ব্যক্তি সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের সিপাইপাড়া এলাকার মাদক ব্যবসায়ী ভুট্টোর বাড়িতে যান।
একপর্যায়ে ভুট্টোর সঙ্গে তাদের কথাকাটাকটি হয়। এরই একপর্যায়ে দুই পুলিশ সদস্যের সঙ্গে থাকা হাতকড়া ভুট্টোর হাতে পরাতে যান। এসময় ভুট্টোর চিৎকারে তার স্বজন ও প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে পুলিশ সদস্য ওমর ফারুককে আটক করেন।
তার সঙ্গে থাকা এএসআই মোশাররফ হোসেন, আমিরুল ইসলাম ও মাসুদ পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। পরে ভারতীয়রা ওমর ফারুককে ধরে মারধর করেন এবং ভারতের চানাকিয়া বিএসএফ ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যদের হাতে তুলে দেন।
সোমবার সন্ধ্যায় ওই সীমান্ত এলাকায় ৭৫৩ নম্বর মেইন পিলারের কাছে বিজিবি ও বিএসএফের ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে পুলিশ সদস্য ওমর ফারুককে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে বিএসএফ।
সদর থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) জামাল হোসেন বলেন, ‘পুলিশ সদস্য ওমর ফারুকের সঙ্গে পুলিশ লাইন্সে কর্মরত এএসআই মোশাররফ হোসেন, মমিনপাড়া এলাকার মাদক ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম ও মাসুদ নামের এক ব্যক্তি ছিলেন।
সোমবার রাতেই তাদের নামে একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে দুই পুলিশ সদস্যকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিএসএফের ফেরত দেয়া ওমর ফারুক নামের ওই ব্যক্তি পুলিশ সদস্য হওয়ায় আমরা তাকে পুলিশের হাতেই তুলে দিয়েছি। পুলিশ বিষয়টি বিভাগীয় তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।’