বছরের পর বছর খেলাপি অর্থের হিসাবের বোঝা টানতে হয় ব্যাংকগুলোকে। বিপরীতে কোনো আয় না থাকা ও দীর্ঘদিন সুদ-আসল না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যাংকগুলো। এক্ষেত্রে আদালতকে দ্রুত অর্থ মামলাগুলো নিষ্পত্তির দাবি সংশ্লিষ্টদের। জটিলতা দূর করতে বিশেষ আদালতের সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ আইনজীবীদের।বিনিয়োগকৃত অর্থ থেকে প্রাপ্ত সুদই ব্যাংকের আয়ের প্রধান উৎস। তবে সেই সুদ আদায় হচ্ছে না ঠিকমতো। খেলাপি হওয়ার বিপরীতে মামলা হলেও এর গণ্ডি পেরিয়ে সমাধানের পথ অনেক দূর। এমন অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদন বলছে, খেলাপি ৯৪ হাজার ৪৪০ কোটি টাকার অনাদায়ী সুদের পরিমাণ ৩৫ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের রয়েছে ১৭ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা ও বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোতে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৫৭৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা। ব্যাংকাররা বলছেন, মামলার রায়ে ধীরগতির কারণেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যাংকগুলো।
ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমরানুল হক বলেন, নিরাপত্তার জন্য ওদেরও কিন্তু আইনের অনেক ধারায় যেতে হয়। তারা হয়তো রিট করে দেয়, তারা হয়তো স্ট্রে নেয়। তারপর হয়তো উচ্চ আদালতে গিয়ে আপিল করে। এগুলোর প্রক্রিয়া শেষ করতে সময় যতটুকু লাগার কথা তার চেয়ে অনেক বেশি লেগে যায়। এই প্রক্রিয়া যদি একটু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আনা যায় তাহলে ব্যাংকের জন্য ভালো, আমাদের অর্থনীতির জন্যও ভালো। দেশে যে সরকার থাকবে তাদের জন্যও ভালো।
এদিকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অর্থ কেলেঙ্কারির মামলাগুলো নিষ্পত্তির দায়িত্ব অর্থ ঋণ আদালতের। ঢাকাসহ জেলাপর্যায়ে এমন বিশেষ আদালত থাকলেও রয়েছে মামলার দীর্ঘসূত্রতা। এতে স্বল্প সময়ে ব্যাংকগুলো ফিরে পাই না অর্থ।সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. কাজী জাহেদ ইকবাল বলেন, সমস্যার সমাধানে বাড়াতে হবে আদালতের সংখ্যা ও লজিস্টিক সাপোর্ট।
তিনি বলেন, বেশ দীর্ঘ সময় লাগে মামলাগুলো নিষ্পত্তি হতে ফলে ব্যাংকের টাকা আটকে থাকে। এটাই আসলে অসুবিধার জায়গাটা।
মামলার কার্যক্রম গতিশীল করতে উচ্চ আদালতেও এমন ব্যবস্থাপনা তৈরি করতে হবে বলেও মত এ আইনজীবীর।