ঘাগড়ায় ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে ইজিপিপি প্রকল্পের ৬৬২শ্রমিক পেলো মুজুরীর টাকা।
3, March, 2021, 2:13:25:AM
আরিফ রববানী,(ময়মনসিংহ)= ময়মনসিংহ সদরের ঘাগড়া ইউনিয়নে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (EGPP) কাজের শ্রমিক মুজুরীর টাকা বিতরণ করা হয়েছে। শতভাগ স্বচ্ছতার মধ্য দিয়ে ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে ইউনিয়নের কর্মরত ৬৬২জন শ্রমিক স্বশরীরে ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে মধুমতি ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে তাদের কাজের মুজুরীর ৮হাজার টাকা থেকে ২হাজার টাকা সঞ্চয় জমা রেখে ৬ হাজার টাকা করে মোট- ৩৯৭২০০০ (উনচল্লিশ লক্ষ বাহাত্তর হাজার) টাকা শ্রমিকদের ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে স্বচ্ছতার সাথে বিতরণ করা হয়েছে। নিজের আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে ঘাগড়া ইউনিয়নের কর্মহীন ও অতিদরিদ্ররা তাদের মুজুরীর টাকা বুঝে পেয়ে খুশিতে সরকার ও ইউপি চেয়ারম্যান এবং প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অতিদরিদ্র পরিবারে কাজ কর্ম করতে অক্ষম হয়ে উপার্জন বন্ধ হয়ে যাওয়া ও অনত্র কাজ না পাওয়ায় শ্রমিকদের আর যেন অলস সময় পার করতে না হয়, সে জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ৪০ দিনের অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (EGPP) গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারের দেওয়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ ও কাজের মুজুরী পেয়ে ওই পরিবারের অভাব অনটন দূর হয়েছে, ফলে পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফুটেছে। সুত্র জানায়- ময়মনসিংহ সদর উপজেলার মোট ১১ টি ইউনিয়নে মোট ৯৯ টি প্রকল্পের মাধ্যমে মোট ৬ হাজার ১শত ১৬ জন অতিদরিদ্র শ্রমিক কাজ করেছে এই কর্মসূচিতে। তার মধ্যে ঘাগড়া ইউনিয়নে মোট ৬৬২জন শ্রমিক কাজ করেন। মধুমতি ব্যাংক এজেন্ট কামরুজ্জামান সুমন জানান-ঘাগড়া ইউনিয়নের ৬৬২জন শ্রমিক ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে সনাক্ত করে প্রতিজনের থেকে সঞ্চয় বাবদ ২০০০টাকা জমা ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাবে জমা রেখে ৬হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এতে ৩৯৭২০০০ উনচল্লিশ লক্ষ বাহাত্তর হাজার টাকা বিতরন করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতাধীন ৩নং ওয়ার্ডের ভাটি ঘাগড়া এলাকার শ্রমিক আবু হানিফা জানান, ভারী কাজ করতে না পারায় কেউ কাজে লয় না,তাই অনেক কষ্ট করতে হয়েছিলো । ৪০ দিনের এ কাজ পেয়ে আমার সংসারের অভাব দূর হয়েছে। তাছাড়া এই প্রকল্পে কাজ করতে কাউকে কোন ঘুষ দিতে হয়নি। মধুমতি ব্যাংকের মাধ্যমে আমি আমার আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে নিজের টাকা নিজে তুলেছি,এ জন্য কাউকে কোন দালালী ও ঘোষ দিতে হয়নি। ২২৪নং জব কার্ডধারী রেহেনা খাতুন নামের আরেকজন শ্রমিক বলেন, সংসারের উপার্জন করার মত কেউ নেই, মহিলা বলে কেউ কোন কাজে লয়না, অনেক কষ্টে ছিলাম,তবে এই কাজটি পেয়ে ও স্বচ্ছ ভাবে আমার পারিশ্রমিক আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে আমার হাতে পেয়েছি,পরিবারের মুখে দু’মুটো ভাত তুলে দিতে পারছি। এতেই আমরা খুশি। ঘাগড়া ইউনিয়নে সরকারের এই প্রকল্পের কাজের মুজুরীর টাকা স্বচ্ছ ভাবে দেওয়া হয়েছে বলে স্বীকার করে ২০২ নং জব কার্ডের চর ঘাগড়া এলাকার মহিলা শ্রমিক রহিমা খাতুন বলেন-হুনছি মাইনসে কয় কর্মসৃজন এই কাজের বেতনের টাকা নাকি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের অর্ধেক দেহালাল লাগে,কই আমিতো আমার টাকা আমার হাতেই তুললাম,কাউকে তো কোন টাকা-পয়সা দেওয়া লাগেনি। হুদাই খালী চেয়ারম্যান-মেম্বারগর বদনাম করে। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাজাহান সরকার সাজু বলেন, কর্মহীন ও অবসর সময়ে শ্রমিকরা যাতে বেকার না থাকে সরকার সে জন্য এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। একজন শ্রমিক শনিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত একটানা মোট ৫দিন কাজ করেছেন। প্রতিদিন ২শত টাকা হারে তাদের মজুরী প্রত্যেক সপ্তাহে নিজ নিজ ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসেবে জমা করা হয়েছিলো। জমাকৃত সেই মুজুরীর টাকা মধুমতি ব্যাংকের মাধ্যমে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন-এ প্রকল্পের মাধমে এলাকায় রাস্তা, ড্রেন, কবরস্থান, ঈদগাঁ মাঠ, খেলার মাঠ, জলাধারসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাটি কাটা ও সংস্কার কাজ করা হয়েছে। এর ফলে একদিকে যেমন গ্রামীণ এলাকার রাস্তাঘাট উন্নত হয়েছে, অন্যদিকে বেকার সময়ে বসে না থেকে কাজ পেয়ে শ্রমিকরাও আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন।