পঞ্চগড় শহরের তেতুঁলিয়া রোডের ডোকরোপাড়া এলাকায় আইডিয়াল ক্লিনিক নামে একটি লাইসেন্স বিহীন, প্রশিক্ষিত দক্ষ জনবল, সার্বক্ষনিক একজন মেডিকেল অফিসার না থাকায় জনগণের সাথে চিকিৎসা সেবার নামে প্রতারণা এবং নার্স আয়াদের নিয়ে দেহ ব্যবসার অভিযোগে ৫৫ হাজার টাকা জরিমানাসহ সিলগালা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। বৃহস্পতিবার(০৩ জুন) বিকেলে জেলা শহরের তেতুঁলিয়া রোডের ডোকরোপাড়া এলাকায় আইডিয়াল নামের ওই ক্লিনিকের মালিক জাহিদ হোসেনকে এই অর্থদণ্ড প্রদান করেন নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলার নিবার্হী কর্মকর্তা মো. আরিফ হোসেন। এ সময় সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিনুল ইসলাম, পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার মো আতাহার সিদ্দিকী, সদর থানার উপ-পরির্দশক মো শামসুজ্জোহা সরকার সহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ভ্রাম্যমান আদালত সূত্রে জানা যায়, নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে জেলা শহরের আইডিয়াল নামের ক্লিনিকে অভিযান পরিচালনা করা হলে প্রতিষ্ঠানটির মালিক জাহিদ হোসেন ক্লিনিকের লাইসেন্স, প্রশিক্ষিত দক্ষ জনবল দেখাতে ব্যর্থ হন। একই সাথে ক্লিনিকটিতে সার্বক্ষনিক একজন মেডিকেল অফিসার না থাকায় মেডিকেল প্রাকটিস এবং বেসরকারী ক্লিনিক ও ল্যাবরেটরি (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ ১৯৮২ এর ৮ ধারা ভঙ্গের অপরাধে ৫ হাজার টাকা এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ২৭ এর ৫ উপধারা ভঙ্গের অপরাধে ৫৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। একই সাথে ক্লিনিকের যাবতীয় মালামাল জব্দ করে সাময়িকভাবে সিলগালা করে দেন নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট। একই সাথে ক্লিনিকের যাবতীয় মালামালের দ্বায়িত্ব পঞ্চগড় জেলা প্রাইভেট ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনিষ্টক এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো সাইদুল ইসলামের হাতে দেয়া হয়। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, গত (২৯ মে) ভোর ৬ টার সময় ডিউটিরত অবস্থায় ওই আইডিয়াল ক্লিনিকের আয়া তাছলিমা আক্তার অফিসেরর রুমে এক যুবকের সাথে অসমাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়।অবৈধ মেলামেশা করা অবস্থায় ক্লিনিকে থাকা অপর স্টাফ তাদের আটক করে। পরে তাদেরকে আইডিয়াল ক্লিনিকের অফিস কক্ষে আটক করে রাখা হয়। সকালে পুলিশে খবর দিলে আইডিয়াল ক্লিনিকের আয়া তাছলিমা ও লিমনকে থানায় নেয়ার পরে আয়া তাছলিমার মা বাদী হয়ে নারী শিশু মামলা দায়ের করে। এবং আসামীকে আটক দেখিয়ে আদালতের মাধ্যেমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। ওই যুবকের বাড়ি পঞ্চগড় মকবুলার রহমান সরকারী কলেজের পাশে। তার নাম লিমন হোসেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে আরো জানা যায়, পরবর্তিতে ক্লিনিকের মালিক যখন ক্লিনিকের লাইসেন্স, প্রশিক্ষিত দক্ষ জনবল নিয়োগ এবং সার্বক্ষনিক একজন মেডিকেল অফিসার নিয়োগ করবেন কেবল তখনি আবেদন সাপেক্ষে সিভিল সার্জন অথবা তার প্রতিনিধির মাধ্যমে জনসাধারণের জন্য ক্লিনিকটি খুলে দেওয়া হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নিবার্হী ম্যাজস্ট্রেট ও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফ হোসেন জানান, নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে পঞ্চগড় শহরের আইডিয়াল নামের এই ক্লিনিককে লাইসেন্স না থাকা, প্রশিক্ষিত দক্ষ জনবল না থাকা, সার্বক্ষনিক একজন মেডিকেল অফিসার না থাকা এবং জনগণের সাথে চিকিৎসা সেবার নামে প্রতারণার দায়ে ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অবৈধ ক্লিনিক পরিচালনাকারীদের আইনের আওতায় আনতে তালিকা তৈরী করা হয়েছে। প্রত্যেককে এই আইনের আওতায় আনা হবে। আগামীতে আমাদের এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।পঞ্চগড়ে ক্লিনিকগুলোর অভিযানকে অনেকে সাধুবাদ জানিয়েছেন কারণ দীর্ঘদিন যাবত ক্লিনিকগুলো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে পঞ্চগড়ে বলে জানান অনেকে।