মো.বাবুল হোসেন পঞ্চগড় জেলা  প্রতিনিধি:

হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করায় পূর্বের ধর্মের লোকজন কর্তৃক এবং পারিবারিকভাবে বিভিন্ন হুমকি ধামকিসহ নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে এমন অভিযোগ এনে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন এক নওমুসলিম যুবক।

সোমবার রাতে `Sumon Roy` নামক একটি ফেসবুক আইডি থেকে বিভিন্ন পবলিক গ্রুপে স্ট্যাটাস দেন তিনি। যুবকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে আইডিটি তার ব্যক্তিগত দাবি করেন।

ওই স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেন, এদেশে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের ধর্মান্তরিত হওয়ার অধিকার রয়েছে। তাহলে আমার অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে কেন?

তিনি লিখেছেন- আমি সুস্থ্য মস্তিষ্কে, স্ব-জ্ঞানে ইসলাম গ্রহণ করেছি। কারো প্ররোচনা এবং কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর চাপের মুখে ইসলাম গ্রহণ করিনি। দীর্ঘদিন ইসলামকে অনুসরণ করে আকৃষ্ট হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পূর্বের ধর্মে ফিরে যাবার কোন ইচ্ছেই আমার নেই। আমার পরিবারেও আমি ফিরে যেতে চাইনা। 

 

পাঠকদের জন্য তার পুরো স্ট্যাটাসটি হুবুহুব তুলে ধরা হলো:-

আমি সুমন (২৩), পিতা- সুপেন রায় ওরফে নিপেন্দ্রনাথ রায়। পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার সরকারপাড়া গ্রামে আমার পৈত্রিক বাড়ি। আমি গত ৮/৬/২০২১ ইং তারিখে একজন আইনজীবির মাধ্যমে অ্যাফিডেভিড মূলে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নেই। আমার নতুন নাম আব্দুল্লাহ আল মুয়াজ।

এদিকে, আমার ধর্মান্তরিত হওয়ার বিষয়টি টের পেয়ে আমার পূর্বের ধর্মের লোকজন এবং পরিবার বিভিন্ন ভাবে আমাকে হুমকি দিতে থাকে। পারিবারিক ভাবে আবদ্ধ করে রাখা হয় আমাকে। সেখানে ইসলাম ধর্মের নিয়মনীতি পালনে বাধা দেয়ায় সেখান থেকে আমি পালিয়ে আসি। এখন আমার অবস্থান সনাক্ত করতে পেরে আমাকেসহ আমার আশ্রয়দাতাদের পুলিশি হয়রানি করা হচ্ছে। 

আমার জানা মতে, এদেশে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের ধর্মান্তরিত হওয়ার অধিকার রয়েছে। তাহলে আমার অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে কেন?

জানিয়ে রাখি যে, আমি সুস্থ্য মস্তিষ্কে, স্ব-জ্ঞানে, কারো প্ররোচনা এবং কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর চাপের মুখে ইসলাম গ্রহণ করিনি। দীর্ঘদিন ইসলামকে অনুসরণ করে আকৃষ্ট হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পূর্বের ধর্মে ফিরে যাবার কোন ইচ্ছেই আমার নেই। আমার পরিবারেও আমি ফিরে যেতে চাইনা। 

আমি শান্তির ধর্ম বেছে নিয়েছি। এখানে নিরাপদ থাকতে চাই, নতুন ভাবে জীবন শুরু করতে চাই। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।

আমার ধারণা, আমার পরিবার এবং হিন্দু ধর্মের লোকজন পুলিশকে বিষয়টি অন্যভাবে বুঝিয়েছে। আমি জেনেছি, আমাদের পুলিশ সুপার মহোদয় এবং দেবীগঞ্জ থানার ওসি মহোদয় অত্যন্ত মানবিক। উনারা আমাকে বুঝবেন নিশ্চয়ই। সবসময় আপনাদের পাশে পাবো আশারাখি।

 

নওমুসলিম আব্দুল্লাহ আল মুয়াজের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ধর্মান্তরিত হবার পর বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন তিনি। নিজের বাড়িতে থেকেই ইসলাম ধর্মের নিয়মনীতি পালন করতেন। এক পর্যায়ে বিষয়টি বাড়ির লোকজন বুঝে ফেলে এবং বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।

তিনি বলেন, আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল থাকলে আমাকে আমার মামার বাড়িতে আটকে রাখা হয়। সেখানেও বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হলে আমি পালিয়ে আসি। এখন পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।

সুমন ওরফে মুয়াজ বলেন, আমি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তেই আগের ধর্ম ছেড়ে ইসলাম গ্রহণ করেছি। এখানে থেকেই স্বাধীনভাবে চলতে চাই।