রাতে প্রেমিকার সাথে গোপনে প্রেম করতে এসে ধরা খেল উজ্জল অধিকারী(২৮) নামে এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্চগড় সদর উপজেলার আমলাহার গ্রামে। উজ্বল অধিকারী পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার হরিপুর গ্রামের রূপ নারায়ণের ছেলে।
গতকাল রাত সাড়ে ৯ ঘটিকায় উজ্জল অধিকারীকে প্রেমিকা আফসানা (ছদ্মনাম) আমলাহার এলাকার স্কুল পড়ুয়া ছাত্রীর সাথে ঘরের বাহিরে প্রেম খেলায় মেতে উঠতে দেখে স্থানীয়রা প্রেমিক-যুগলকে আটক করে উভয়ের পরিবারকে খবর দেয়। পরে খবর পেয়ে মেয়ের পরিবারের লোকজন এসে উজ্জল অধিকারীকে মেয়ের বাড়িতে নিয়ে ঘরে আটকে রাখেন।
রাতেই বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সদর থানা পুলিশের একটি টিম ও উপজেলার ৯ নং মাগুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ সহ ইউপি সদস্য তাহের ও নবী মেয়ের বাসায় ছুটে এসে উজ্জলকে মেয়ের ঘরে আটক অবস্থায় দেখতে পান। এরপর পুলিশ উজ্জল অধিকারীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উজ্জল অধিকারী আমলাহার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাইভেট-কোচিং পড়িয়ে আসছেন।
প্রাইভেট পড়ানোর সুবাদে বিভিন্ন মেয়ের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন তিনি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গ্রামের সহজ সরল মেয়েদের সরলতার সুযোগ নিয়ে উজ্জল অধিকারী বিভিন্ন স্কুল পড়ুয়া মেয়েদের সাথে প্রথমে সখ্যতা গড়ে তোলে এরপর ছাত্রীদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে।
স্থানীয়রা জানান, করোনা মহামারীর সময় ছাত্রীদের পড়াশোনা কেমন চলছে তা জানার ভান করে উজ্জল অধিকারী প্রায়ই রাতে বিভিন্ন ছাত্রীদের বাসায় গিয়ে দীর্ঘক্ষন অবস্থান নিয়ে ছাত্রীদের সাথে হাসি ঠাট্টায় মেতে উঠতেন।
অনেক অভিভাবকের কাছে বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ তৈরী হলে তারা তার মেয়েদেরকে উজ্জল অধিকারীর কাছে টিউশনি পড়তে যাওয়া বন্ধ করে দেন।
গতকাল রাতের ঘটনাটি ফাঁস হলে বিভিন্ন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা টিউশনি শিক্ষক উজ্জল অধিকারীর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেন।
উজ্জলের কাছে প্রাইভেট পড়তে আসা স্কুল ছাত্র সৌরভ (ছদ্মনাম) জানান, প্রাইভেটে উজ্জল স্যার সব সময় মেয়েদের কাছে ভিড়ার চেষ্টা করেন। বিনা প্রয়োজনে তিনি মেয়েদের সাথে হাসাহাসি ও খুনসুটিতে মেতে উঠতেন। সৌরভ জানান, উজ্জল স্যারকে কখনো দেখলাম না পড়াশোনার খোঁজ খবর নিতে কোন ছাত্রের বাসায় যেতে। সৌরভ আরও জানান, মেয়েদেরকে মেধাবী ও ইংরেজিতে দক্ষ করার দোহাই দিয়ে উজ্জল স্যার গ্রামের অভিভাবকদের ভুলভাল বুঝিয়ে তাদের মেয়েদেরকে প্রাইভেটে নিয়ে আসেন, অভিভাবকদের কথা শুনে অনেক মেয়ে শিক্ষার্থী প্রাইভেটে পড়তে এসে উজ্জলের মেয়েলী লালসা দেখে বহু মেয়ে তার কাছে আসা বন্ধ করে দেয় বলে জানান সৌরভ।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে আফসানা’ র (ছদ্মনাম) পরিবারের একজন জানায়, আমাদেরকে কয়েকজন এসে বললো যে আপনাদের মেয়েকে উজ্জল সহ আমরা আটক করেছি আপনারা আসেন,পরে আমরা ঘটনা স্থল থেকে উজ্জলকে আটক করে ঘরে আটকে রাখি, পরে পুলিশ এসে উজ্জলকে থানায় নিয়ে যায়।
এদিকে উজ্জল অধিকারী এই কাছে ঘটনাটি স্বীকার করে বলেন, আমি ভুল করেছি, আর এমন কাজ আমার দ্বারা হবে না।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আবদুল লতিফ এই কে বলেন, গতকাল রাতে আমরা ছেলেকে আটক করে থানায় নিয়ে এসেছি, মেয়ের পরিবার থেকে কোন অভিযোগ করা হয় নি, ছেলের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান,, উজ্জল অধিকারী করোনা মহামারীতে সরকারের ঘোষিত কঠোর লকডাউনেও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে আমলাহার এলাকায় টিউশনি ও কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে আসছেন।
বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির ছাত্র সংগঠন ‘ছাত্রমৈত্রী’র পঞ্চগড় জেলা শাখার সভাপতি হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন এলাকায় কমিটি দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে উজ্জল অধিকারীর বিরুদ্ধে।