সরকারের গণটিকা কর্মসুচী সফল করতে খোরশেদ আলম সুজনের আহবান
5, August, 2021, 12:00:18:AM
এম ডি বাবুল
চট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান
সরকারের গণটিকা কর্মসূচী সফল করতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। আজ বুধবার (৪ আগস্ট ২০২১ইং) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ আহ্বান জানান।
এসময় তিনি বলেন সরকার বিনামূল্যে টিকাদান কর্মসূচী গ্রহণ করেছে শুধুমাত্র কোভিডের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য। গবেষকদের মতে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে এ পর্যন্ত টিকাই হচ্ছে সর্বোত্তম ওষুধ। পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশে টিকা প্রদানে তাদের নাগরিকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী টিকাখাতে হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে কার্পণ্য করছেন না। তাই এর সুফল যাতে সকল নাগরিক ভোগ করতে পারে সেদিকে সকলকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। অযত্ন অবহেলায় একটি টিকাও যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখা একান্ত প্রয়োজন। এছাড়া টিকা পরিবহন ও একটি বিশেষ মাত্রায় টিকা সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। আগামী ৭ আগস্ট থেকে দেশব্যাপী গণটিকা কর্মসূচী পালিত হবে। সেজন্য এখনই টিকাদান কেন্দ্রসমূহকে উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে।
যেহেতু কোভিডের জন্য স্কুল কলেজগুলো বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রতিটি ওয়ার্ডে অপেক্ষাকৃত বড়ো স্কুল কলেজগুলিকে টিকাদান কেন্দ্র হিসেবে তৈরী করার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধ জানান তিনি। বয়স্ক নাগরিকদের বসার ব্যবস্থা এবং বয়স্কদের আগেভাগে টিকা প্রদানের ব্যবস্থাও রাখতে হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডের তিনটি কেন্দ্রকে এলাকাওয়ারী ভাগ করে প্রতিদিন যতজন নাগরিক টিকা দিবেন তার তালিকাও আগে প্রস্তুত করতে হবে। যার যেদিন টিকা গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ হবে সে ব্যক্তি যেন সেদিনই টিকা দিতে আসে। নচেৎ একসাথে সবাই যদি টিকা দিতে কেন্দ্রে এসে ভিড় করে সেক্ষেত্রে বিশৃংখল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। তাই সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সকল নাগরিক যাতে টিকা গ্রহণ করতে পারে সেদিকে সবার লক্ষ্য রাখা একান্ত প্রয়োজন। এক্ষেত্রে এলাকার সামাজিক সংগঠনগুলোকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি। টিকাদান কেন্দ্রে প্রতিটি নাগরিককে অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র সাথে নিয়ে আসার অনুরোধ সুজনের।
তিনি আরো বলেন নগরীর প্রতিটি সরকারী এবং বেসরকারী হাসপাতালগুলো করোনা রোগীতে ভর্তি। আইসিইউ এবং অক্সিজেনের জন্য রোগীর স্বজনদের হাহাকার চরমে। চিকিৎসক, নার্সরা রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় নগরীর পতেঙ্গাস্থ বেপজা নারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং পাহাড়তলী হাজী ক্যাম্পকে আইসোলেশন সেন্টারে পরিণত করার অনুরোধ জানান তিনি। এছাড়া প্রতিটি উপজেলা এবং জেলার স্কুল, কলেজ ও সরকারী স্থাপনায় আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনের অনুরোধও সুজনের। আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনের ফলে কম আক্রান্ত রোগীরা সেখানে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পারবে। ফলে সকল রোগীর মূল শহরে আসার প্রয়োজন হবে না।
এতে করে কোভিড চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে রোগীর চাপ কমে আসবে। এছাড়া চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের নতুন ভবনটিও সম্পূর্ণ তৈরী আছে। সরকার চাইলে সেখানে ৪০০ বেডের কোভিড হাসপাতাল গড়ে তুলতে পারে। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেই হাসপাতালটিও নগরীর কোভিড চিকিৎসার উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। দ্রুত সময়ের মধ্যে হাসপাতালটি তৈরী করতে না পারলে নগরীর কোভিড পরিস্থিতি মোকাবেলা করা কঠিন হয়ে পড়বে।
তিনি আরো বলেন আগে সচরাচর দেখা যেতো প্রতিটি দুর্যোগে এনজিওরা ঝাঁপিয়ে পড়তো। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কোভিডের এই মহামারীতে এনজিওদের কর্মকান্ড সেরকমভাবে চোখে পড়ছেনা। শুধুমাত্র গুটিকয়েক এনজিও যৎসামান্য কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে আর্থিক কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত এনজিওরা খুব ভালোভাবে তাদের কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। কোভিড মহামারীতেও তাদের কিস্তি আদায় বন্ধ নেই। উপরন্তু বিভিন্ন জায়গায় তারা গ্রাহকদের সাথে অমানবিক আচরণ করছে। এসব এনজিওগুলোকে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সকল সুদ মওকুফ এবং কিস্তি আদায় বন্ধ রাখার উদাত্ত আহবান জানান তিনি।