চট্টগ্রামে হিন্দু পরিচয় গোপন করে মুসলিম মেয়ে ইয়াছমিন আক্তার এনিকে (২৪) বিয়ে করেছে বাবলু দে প্রকাশ তনু (৩০)। তাদের বিয়ে হয় প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে। এক পর্যায়ে বিয়ে করে সংসারও পাতেন তারা। সেই সংসারে আলো ছড়ায় দেড় বছরের একটি কন্যা সন্তানও। তবে সবকিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে গেল এক নিমিষেই।
গত ৩ আগস্ট ওই তরুণীকে নির্যাতন করে হত্যার পর হিন্দু রীতিতে পুড়িয়ে ফেলে বাবুল। মুসলিম মেয়েকে জামাই কেন হিন্দু রীতিতে পোড়াল, এই নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। এনিয়ে মেয়েটির পরিবার স্বামীকে প্রধান আসামি করে ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেছে।
মামলার পর বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) রাত ১টার দিকে পুলিশ অভিযুক্ত ওই তরুণীর স্বামী বাবলু দে তনুকে (৩০) উপজেলার জ্যৈষ্ঠপুরা বীণাপানি সংঘ পূজামণ্ডপ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
এর আগে গত ১৬ আগস্ট নিহত তরুণীর মা রোকসানা বেগম বাদী হয়ে চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এনির স্বামীসহ ১৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোকারম ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রতন চৌধুরীকেও আসামি করা হয়।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, গত ৩ আগস্ট বিকেল ৩টার দিকে নিহত এনির খালাতো বোন হাসিনাকে স্বামী বাবুল মুঠোফোনে জানান, এনি মারা গেছেন। হাসিনা এনির পরিবারকে খবরটি দেন। এনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে স্বামী জানান। এনির মা লাশ নিতে গ্রামের বাড়ি থেকে রওনা দেবেন বলে জানান। কিন্তু ওই রাতেই বাবুলের ভাই পরিচয়ে একজন ফোন দিয়ে এনির মাকে যেতে বারণ করেন।
তাকে জানানো হয়, স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ স্থানীয় লোজনের পরামর্শে লাশ সৎকার করা হয়েছে। একজন মুসলিম মেয়েকে কীভাবে সৎকার করেছেন জানতে চাইলে তাকে জানানো হয়, এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বার, চৌকিদার এবং প্রতিনিধিদের পরামর্শে লাশ আগুনে পুড়িয়ে সৎকার করা হয়েছে।মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (এসআই) সুমন দে বলেন, ওই গৃহবধূ মুসলিম পরিবারের মেয়ে। মারা যাওয়ার পর তার লাশ আগুনে পুড়ে ফেলায় নিহতের মা এ ঘটনায় আদালতে স্বামীসহ ১৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে মামলা দায়ের করে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বোয়ালখালী থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।