প্রতিহিংসার রাজনীতিতে জর্জরিত নারায়ণগঞ্জ। নারায়ণগঞ্জের রাজনীতির মাঠে নিজ নিজ দলের নেতারাই এখন নিজেদের প্রতিপক্ষ। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ ও দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাহিরে থাকা বিএনপির নেতাদের গ্রুপিংয়ের কারণে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতির সেই ঐতিহ্য হারিয়ে গেছে। অথচ স্বাধীনতার পর থেকেই রাজনীতি দেশের রাজনীতিতে গুরুত্ববহন করত। এমনকি স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রথম বেসরকারি প্রতিরোধ যুদ্ধ এই নারায়ণগঞ্জে হয়েছিল। আওয়ামীলীলীগের প্রতিষ্ঠাও হয়েছিল এই নারায়ণগঞ্জে। অথচ বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগে নোংরা রাজনীতি চলছে বলে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দাবী করেছেন। মূলত বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামীলীগের গ্রুপিং চলে আসছে। তারই ধারাবাহিগতায় আগামী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতির নোংরামি চরম আকারে রূপ নিয়েছে। অপরদিকে, দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার বাহিরে থাকায় নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতারা অনেকটা হতাশ। তাই দলকে সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী করতে কেন্দ্রের চাপ থাকলেও স্থানীয় নেতাদের কোন্দলের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি কোন্দলের কারণে জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও থানা পর্যায়ের কমিটিগুলোও হচ্ছে না। তার মধ্যে অভিযোগ উঠেছে, টাকার বিনিময়ে দলের অযোগ্যদের হাতে থানা পর্যায়ের কমিটি তুলে দেয়ার পায়তারা চলছে। আর দলের এই দু:সময়ে টাকার বিনিময়ে কমিটি দেয়ার বিষয়টিও ভাল চোখে দেখছেন না সাধারণ নেতাকর্মীরা। তারমধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেয়ায় নারায়ণগঞ্জে নির্বাচনী মাঠে নেই নেতাকর্মীরা। সূত্র বলছে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিটি দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বরাবরই নারায়ণগঞ্জকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। নারায়ণগঞ্জের নেতারা ঢাকার সমাবেশে যোগ না দিলে সেই সমাবেশই সফল হত। স্বাধীনতার পূর্বে থেকেই দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল নারায়ণগঞ্জের। দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নারায়ণগঞ্জ যে অবস্থান ধরে রেখেছিল তা ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। মূলত নারায়ণগঞ্জে রাজনীতির সঠিক চর্চার অভাব দেখা দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোতে সুবিধাবাদি নেতারা দাপুটে হওয়ায় প্রকৃত রাজনীতিকরা রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। জানাগেছে, টানা তৃতীয় বার ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামীলীগ ও জাপা। ক্ষমতার বাইরে বিএনপি। বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ৯০ এর পর থেকে যারাই ক্ষমতায় এসেছে সব ক’টি দলের সাথে ছিল। বাংলাদেশের রাজনীতির সর্ববৃহৎ দল তিনটি। আওয়ামীলীগ স্বাধিনতার নেতৃত্বদানকারী। বিএনপি স্বাধীনতার ঘোষক দাবিদারের প্রতিষ্ঠিত দল। প্রয়াত হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি। কাগজে কলমে শক্তিশালী তিনটি দল। তবে তৃনমূলের নেতাকর্মীদের ভাষ্য ভিন্ন। আওয়ামীলীগ ও বিএনপি আভ্যন্তরিন কোন্দল, দলীয় নেতায়, নেতায় বিভাজনসহ নানা কারণে দল দু’টির সাংগঠনিক অবস্থা নারায়ণগঞ্জে ক্রমশ দূর্বল হয়ে পরছে বলে মনে করেন দল দু’টির তৃনমুলের নেতাকর্মীরা। এদিকে, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগে বিভাজন ও রাজপথে নিষ্প্রভ বিএনপি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বৃহৎ এই দল দু’টির বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থা খুবই খারাপ অভিমত দল দু’টির তৃনমূল নেতাকর্মীদের। এই নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের জন্ম। কিন্তু টানা তৃতীয় বার আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলেও নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক অবস্থা খুবই দূর্বল। তার মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নেতায় নেতায় গ্রুপিং বেড়েছে। আওয়ামীলীগের তৃনমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, দলের আভ্যন্তরীন কোন্দলে জন্মস্থানেই আওয়ামীলীগ কোনঠাসা।