সেফটিক ট্যাংকে ছেলের লাশ রেখে নির্বাচনী প্রচারণায় মা-বাবা
27, November, 2021, 12:08:23:PM
মোঃ আজাদুল ইসলাম,সিরাজগন্জ/উল্লাপাড়া প্রতিনিধিঃ
বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে ছেলের মরদেহ দুইদিন ধরে বালু দিয়ে ঢেকে রেখে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছে মা-বাবাসহ পরিবারের লোকজন।
শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার নারিনা ইউনিয়নের পুর্ব পাড়ায়
সেপটিক ট্যাংক থেকে করিম (১৮) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে শাহজাদপুর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় করিমের বাবা-মাসহ ৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শাহজাদপুর থানা পুলিশের একটি দল উপজেলার নারিনা ইউনিয়নের পূর্ব পাড়ায় সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রার্থী করুনা বেগম ও তার স্বামী আলহাজকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। মারা যাওয়া করিম তাদেরই ছেলে।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ছেলের মৃত্যুর বিষয়ে করুনা বেগম ও তার স্বামী আলহাজ বলেন, মেঝো ছেলে করিম দীর্ঘদিন ধরে ড্যান্ডিসহ বিভিন্ন মাদকের নেশায় আসক্ত। গত মঙ্গলবার রাতে খাওয়া শেষে করিম তার ঘরে শুয়ে পড়ে। পরদিন ভোরে করুনা বেগম ডাকাডাকি করলেও কোনো সাড়া না পেয়ে ছোট ছেলের ঘর থেকে উঁকি দিয়ে করিমের লাশ ঘরের আড়ার (ধরনা) সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে স্বামী-স্ত্রী মিলে ছেলের লাশ নামিয়ে বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে বালিচাপা দিয়ে রাখে।
সেপটিক ট্যাংকে মরদেহ রাখার বিষয়ে তারা বলেন, প্রায় দুই বছর পূর্বে বড় ছেলের বউ চিঠি লিখে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়। আবার এই আত্মহত্যার খবর মানুষ জানলে এবার বর্তমান বাড়িটিও থাকবে না। তাই আমরা বুকে পাথর বেঁধে খবর গোপন করেছি।
মৃত করিমের পিতা আলহাজ বলেন, ছেলের মৃত্যুর ঘটনাটি সহ্য করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। তাই শুক্রবার ভোরে আমি গাড়াদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের কাছে এ ঘটনা বলি। তবে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বিষয়ে নরিনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক মুন্সী জানান, ‘৪ দিন ধরে ছেলের লাশ গুম করে রেখে নির্বাচনে ভোট প্রার্থনা করছে সত্যি এটা আশ্চর্যজনক। আমরা একবারের জন্যও অনুমান করতে পারিনি তারা এমন ঘটনা ঘটাতে পারে।’
শাহজাদপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন এন্ড কমিনিউটিং পুলিশিং) আব্দুল মজিদ বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসার পরে নিহতের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’