সময়ের সাথে নারী এগিয়ে চলেছে সমানতালে। আসলে কতটা এগিয়েছে? ক্রীড়াঙ্গনে তো শুধুই হতাশা। সুযোগ-সুবিধা, পারিশ্রমিক, কাভারেজ এখনো পুরুষ এথলিটদের সঙ্গে রাজ্যের ফারাক।
নারী-পুরুষ ভেদাভেদ সরিয়ে একসাথে পথ চললে তবেই ক্রীড়াঙ্গনে বাড়বে নারীর পদাচারণা। নারীর পথচলায় পাকিস্তানের ক্রিকেটার বিসমাহ মারুফ হতে পারেন আদর্শ উদাহরণ।
একটা ছবি হতে পারে নারী দিবসের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন। কাঁধে ব্যাগ প্যাক, এক পাশে কিট ব্যাগ আর অন্য পাশে ছোট্ট কন্যা ফাতিমা। এভাবেই বিশ্বকাপে লড়তে এসেছেন বিসমাহ মারুফ।
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে কে জিতলো কে হারলো নজর নাই কারো। সবার ফোকাস পাকিস্তানের অধিনায়ক বিসমাহ মারুফ আর কন্যাকে নিয়ে। পাকিস্তান দলের সদস্যরা তো বটেই, ভারত শিবিরের আগ্রহের কেন্দ্রে এই দুই মডেল।
অথচ মা হওয়ার খবর যেদিন পেয়েছিলেন, সেদিনই ভেবেছিলেন এখানেই শেষ তার ক্রিকেট জীবন। নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে এক বছর বাদে স্বরূপে ফিরলেন বিসমাহ মারুফ।
মারুফের এই লড়াইয়ে পাশে ছিলো পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড আর তার পরিবার। এ সময় পিসিবি চালু করে যুগান্তকারী এক আইন।
মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকা ক্রিকেটারদের দেয়া হয় এক বছরের ছুটিসহ বেতন এবং পরের বছর চুক্তিও পুনর্নবীকরণ সুযোগ। বিসমাই প্রথম নারী ক্রিকেটার যিনি পেয়েছেন সেই ছুটির সুফল।
সবার সহায়তা আর ইস্পাত কঠিন মানসিকতায় এক বছরের যুদ্ধ শেষে বিসমার প্রত্যাবর্তনে মুগ্ধ সবাই। সবার প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।
পাকিস্তানের এই কাপ্তান সেসব নারীর অনুপ্রেরণার নাম যারা পরিবার আর সমাজ সামলাতে গিয়ে বিসর্জন দিচ্ছেন নিজের ক্যারিয়ার।
সেই কবে কাজী নজরুল বলে গেছেন, বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর। সেই কথার বাস্তব রূপ দিলেন বিসমাহ।
প্রতিটি ঘরেই জন্ম হোক এমনই এক মহাশক্তির। যার দু’চোখে জ্বলবে আগুন, কপাল-ঠিকরে বেরুবে ভয়ঙ্কর তেজরশ্মি, হাতে ঝলসে উঠবে সেই খড়গ।