বরগুনার তালতলীতে নারী পরীক্ষার্থীকে উত্যাক্তের প্রতিবাদ করায় মোঃ সফিকুল ইসলাম নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে বখাটে সোহেল, মাসুদ ও তার সহযোগীরা মারধর করে ডান হাতের রগ কেটে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরীক্ষার্থী সফিকুল এমন অভিযোগ করেন। আহত পরীক্ষার্থীকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। লিখতে না পারায় আহত পরীক্ষার্থী সফিকুল রবিবার সকালে অষ্টম শ্রেনীর এক ছাত্রের সহযোগীতায় পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। মারধরের শিকার ওই পরীক্ষার্থী তালুকদারপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র। ঘটনা ঘটে গতকাল শনিবার দুপুরে পরীক্ষা শেষে উপজেলার তালতলী সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্র প্রাঙ্গণে । এ ঘটনার বিচার দাবীতে ওই দিন সন্ধ্যায় শতাধিক এসএসসি পরীক্ষার্থী শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
জানাগেছে, তালুকদারপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪৭ জন এসএসসি পরীক্ষার্থী শিক্ষক মোঃ ফোরকান মিয়ার তালতলীর বাসায় ভাড়া থেকে পরীক্ষা দিচ্ছিল। ওই বাসার প্রাঙ্গণে বখাটে সোহেল ও মাসুদ বেশ কয়েক দিন ধরে এক নারী পরীক্ষার্থীকে উত্যাক্ত করছিল। শনিবার সকালে পরীক্ষার কেন্দ্রে পাওয়ার পথে বখাটে সোহেল ও মাসুদ ওই নারী পরীক্ষার্থীর ছবি মোবাইলে ধারন করতেছিল। ছবি তুলতে বাঁধা দেয় সহপাঠী সফিকুল। এতে ক্ষিপ্ত হয় বখাটে সোহেল ও মাসুদ। ওই দিন দুপুরে পরীক্ষা শেষে কেন্দ্র থেকে সফিকুল বের হয়ে বাসায় ফিরছিল। এমস সময় বখাটে সোহেল, মাসুদ, হৃদয়, ফৌরদৌস ও ইমরানসহ ৭-৮ জনে তাকে স্কেল দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। এতে ওই পরীক্ষার্থীর ডান হাতের রগ কেটে যায়। স্থানীয়রা পরীক্ষার্থীকে উদ্ধার করে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ মাহফুজা আক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করেছেন। ওইদিন রাতেই শেবাচিম হাসপাতালে তার অপারেশন হয়। অপারেশন শেষে বরিবার সকালে সফিকুল পরীক্ষায় অংশ নিতে তালতলীতে আসেন। লিখতে না পারায় অষ্টম শ্রেনীর এক ছাত্রের সহযোগীতায় সে পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদিকে এ ঘটনার বিচার দাবী করে ওই দিন সন্ধ্যায় শতাধিক এসএসসি পরীক্ষার্থী উপজেলা শহরের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। বখাটে সোহেল দক্ষিণ সওদাগরপাড়া গ্রামের মোঃ কামাল হোসেনের ছেলে।
আহত পরীক্ষার্থী মোঃ সফিকুল ইসলাম বলেন, এক নারী সহপাঠিকে সোহেল ও মাসুদ উত্যাক্ত করছিল। আমি এর প্রতিবাদ করায় আমাকে বখাটে সোহেল , মাসুদ, হৃদয়, ফৌরদৌস ও ইমরানসহ ৭-৮ জনে মারধর করেছে এবং স্কেল দিয়ে পিটিয়ে ডান হাতের রগ কেটে দিয়েছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
পরীক্ষা কেন্দ্র সচিব পরিমল চন্দ্র বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রের বাহিরে কিছু বখাটে এক পরীক্ষার্থীকে মারধর করেছে। আহত পরীক্ষার্থী লিখতে না পারায় রবিবার সকালে অষ্টম শ্রেনীর এক ছাত্রের সহযোগীতায় পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।
তালতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম সাদিক তানভীর বলেন, পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে কেন্দ্রের চারপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।