ময়মনসিংহে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার স্বার্থে শেরপুর থেকে ময়মনসিংহ হয়ে ঢাকাগামী সব গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে বাস-কোচ মালিক সমিতি। ফলে বিকল্প পথ হিসেবে নৌকায় চড়ে সমাবেশে যোগ দেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
শনিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে ময়মনসিংহ পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট মাঠে এ সমাবেশে যোগ দিতে সকাল থেকেই বিকল্প পথে শেরপুর থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় চড়ে নেতাকর্মীরা ময়মনসিংহের পথে যাত্রা করেন।
ধানের শীষের সমর্থকদের কেউ কেউ সিএনজি অটোরিকশা বা মোটরসাইকেলে করেও ময়মনসিংহে ওই সমাবেশে যোগ দেয়ার জন্য গেছেন বলে জানা গেছে।
জেলার সব উপজেলা থেকে ময়মনসিংহ হয়ে ঢাকার পথে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। এদিকে বাস বন্ধ থাকায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ সিএনজি চালকদের বিরুদ্ধে।
বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৯টার কাছাকাছি সময়ে শেরপুর শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা অটোরিকশায় চড়ে ব্রহ্মপুত্র নদের সাতপাকিয়া ঘাটে যান। সেখান থেকে তারা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় চড়ে ময়মনসিংহের দিকে রওনা হন।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এবিএম মামুনুর রশীদ পলাশ সময় সংবাদকে জানান, সকাল ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ৩৬টি ট্রলার দিয়ে ময়মনসিংহের উদ্দেশে ছেড়ে গেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা যেন ময়মনসিংহে সমাবেশে যোগ দিতে না পারেন, সে জন্য সরকারি দলের ইন্ধনে বাস মালিক সমিতি বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন। বিএনপির গণজোয়ারে ভয়ে ভীত হয়ে এ ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। তবে আমরা যেকোনো উপায়ে সমাবেশে যোগ দিয়ে এ জালিম সরকারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলবই।
নদী পথে সমাবেশের যাওয়া বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী মুঠোফোনে জানান, গণপরিবহন বন্ধ করে সমাবেশে নেতাকর্মীর সংখ্যা যাতে কম হয় সেই চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীরা দলকে ভালোবেসে হেঁটে, নদীপথে নৌকাযোগে আসছেন।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি, জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং পুলিশ ও দুর্বৃত্তদের গুলিতে বিএনপি কর্মীদের মৃত্যু, হামলা ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে শনিবার দুপুর ২টায় ময়মনসিংহে বিভাগীয় সমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি।
এদিকে জেলা বাস কোচ মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের আশঙ্কায় সকাল থেকে শেরপুর-ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। সকালে শহরের গৌরীপুর এলাকার পৌর বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, শেরপুর-ঢাকা রুটে চলাচলকারী সোনার বাংলা বাস কাউন্টারটি বন্ধ রয়েছে। এই পরিবহনের বাসগুলো টার্মিনাল এলাকায় সারিবদ্ধভাবে থেমে আছে। বাস বন্ধের বিষয়টি বেশির ভাগ যাত্রীরাই জানেন না। তাই বাস টার্মিনালে এসে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।