শেরপুরে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হবে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং সেন্টার
20, October, 2022, 12:01:28:PM
মোঃ শরিফ উদ্দিন
শেরপুর প্রতিনিধি
শেরপুরে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ৫ একর জায়গায় একটি শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এ্যান্ড ইনকিউবেটর সেন্টার নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি ১৯ অক্টোবর বুধবার রাতে শেরপুরের সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওই কথা জানান। তিনি বলেন, আমি এর আগে ২০১৯ সালে শেরপুরে এসেছিলাম। তখন এখানকার সম্ভাবনার জায়গাগুলো প্রযুক্তি ব্যবহার করে কিভাবে কাজে লাগানো যায় সেটি নিয়ে শেরপুরের রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, তরুণ-তরুণী, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষের সাথে কথা বলেছিলাম এবং শেরপুরের তরুণ-তরুণীদের যে দাবি ছিল সেটি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছি। এরপর দেশে করোনা শুরু হলো। এই করোনাকালীন সময়েও সারাদেশে ১৪টি শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এ্যান্ড ইনকিউবেটর সেন্টার নির্মাণ কাজের অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সুখবর হচ্ছে এর মধ্যে শেরপুর সদর উপজেলাতেও একটি শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে নির্মাণকাজের টেন্ডারও হয়ে গেছে। ২০২৩ সালের শুরু থেকেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। আশা করছি ২০২৪ সালের মধ্যে এটির নির্মাণকাজ শেষ হয়ে দৃশ্যমান হবে এবং এরপর থেকেই এ জেলার তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থানের একটা ঠিকানা হিসেবে সারা বাংলাদেশে পরিচিতি পাবে।
তিনি আরও বলেন, সরকার ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সকল সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। আপনারা জানেন নালিতাবাড়ী প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের কল্যাণে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেটের সুবিধা নিয়ে তৃষ্ণা দিও নামে একটি মেয়ে অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ফ্রিল্যান্সিং করে হাজার হাজার ডলার আয় করছে। তবে সে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও উচ্চগতির ইন্টারনেট আর সহজলভ্য করার বিষয়ে আমাকে জানিয়েছে। ইতোমধ্যে আইসিটি বিভাগের ইনফো সরকার-৩ প্রজেক্টের মাধ্যমে কাকরকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে উচ্চ গতির ইন্টারনেট সংযোগ তার বাড়ি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। আর বিদ্যুতের বিষয়টি এখন আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির কারণে একটু সমস্যা হচ্ছে। আশা করছি দ্রæত এটিও ঠিক হয়ে যাবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এছাড়া আমরা হার পাওয়ার নামে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি, যেটির মাধ্যমে ২৫ হাজার নারীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এখানেও শেরপুরের প্রত্যেকটি উপজেলা থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী উদ্যোক্তা থাকবেন বলে আশা করছি।
পলক বলেন, নালিতাবাড়ীর পাশাপাশি শেরপুরের অন্যান্য উপজেলাতে ‘জয় ডি-সেট সেন্টার’ স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি সারাদেশের মতো শেরপুরেও বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে, যেটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স¤প্রতি উদ্বোধন করেছেন। এছাড়া শেরপুরে দুটি ‘স্কুল অব ফিউচার’ উদ্বোধন করা হয়েছে। সেখানে ইংরেজি ও অঙ্ক শিক্ষা বিশেষ পদ্ধতিতে দেওয়া হবে। এটিও দ্রæত শুরু হবে। সুতরাং শেরপুরের জন্য প্রধানমন্ত্রী অনেক কিছুই উপহার দিচ্ছেন।
এর আগে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে পৌঁছলে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক এমপি, ঝিনাইগাতী উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুল হাসান উৎপলসহ দলীয় নেতৃবৃন্দ।
পরে প্রতিমন্ত্রী সার্কিট হাউজ পৌঁছলে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান শেরপুরের জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার, পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাইয়েদ এজেড মোরশেদ আলীসহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা। এরপর শেরপুর প্রেসক্লাবের তরফ থেকে প্রতিমন্ত্রী পলককে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. শরিফুর রহমান, সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার, সাধারণ সম্পাদক মো. মেরাজ উদ্দিনসহ অন্যান্যরা। ওইসময় প্রেসক্লাবের জন্য একটি ডিজিটাল ল্যাব প্রদানের অনুরোধ করেন প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ। পরে তিনি বিষয়টি নিয়ে প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দকে আশ^স্ত করেন।
প্রতিমন্ত্রীর সাথে অন্যান্যের মধ্যে ইনফো সরকার-৩ প্রকল্প পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ, আইসিটি বিভাগের মহাপরিচালক মো. গোলাম মোস্তফা, ইডিসির প্রকল্প পরিচালক খন্দকার আজিজুল ইসলামসহ অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।