প্রতীকী ছবি: রাজা ইডিপাস ও তার জননী
মাসুম হাসান
অজাচার বলতে মূলত দুজন নিকটাত্মীয়ের মধ্যে অবৈধ, যদিও কিছু অঞ্চলে বৈধ, যৌন সম্পর্ককে বোঝায়। এখানে নিকটাত্মীয় বলতে ভাই-বোন, মা-ছেলে,বাবা-মেয়ে,শ্বশুড়-পুত্রবধু,জামাই-শ্বাশুড়ি,মামী-ভাগ্নে,কাকী-ভাতিজা ইত্যাদি বোঝায় । এটা সমাজে নিষিদ্ধ হিসেবে ধরা হয়। বিভিন্ন ধর্মেও এটার ওপর নিষেধাজ্ঞা ও কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা আছে। কিছু কিছু দেশে শাস্তির জন্য আইনও আছে । অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, ভুটান,ব্রুনেই ,কানাডা, আইসল্যান্ড ,ডেনমার্ক ,জার্মানি ,গ্রিস ,ইন্দোনেশিয়া ,আয়ারল্যান্ড,ইরান ,ইতালি, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে ,পাকিস্তান ,পোল্যান্ড ,সিঙ্গাপুর ,হংকং, সুইজারল্যান্ড সহ বেশ কিছু দেশে এটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে ভারত,তুরস্ক ,থাইল্যান্ড , স্পেন, দ. কোরিয়া, স্লোভেনিয়া ,রাশিয়া,পর্তুগাল , নেদারল্যান্ড ,জাপান,লাতভিয়া,লুক্সেমবার্গ, ফ্রান্স, চীন ,বেলজিয়াম ,আর্জেন্টিনা সহ কিছু দেশে এটা বৈধ ।
আধুনিক ও সভ্য সমাজে এধরণের সম্পর্ক ঘৃণ্যতম কাজ। প্রচলিত আইন ও সামাজিক মূল্যবোধের দিকে লক্ষ্য করে এটি নিষিদ্ধ ও পরিত্যাজ্য বিবেচিত হলেও সমাজে গোপনে অজাচার সংঘটিত হয়ে থাকে। কন্যার সঙ্গে পিতার এবং ছোট বোনের সঙ্গে ভাইয়ের অজাচারের কথা বেশি শোনা যায়। এছাড়া সৎকন্যার সঙ্গে পিতার এবং সৎবোনের সঙ্গে সৎভাইয়ের অজাচার তুলনামূলকভাবে বেশি। তবে অনেক দেশে গোপনে মায়ের সাথে যৌন সম্পর্ক গড়ে উঠে । আর এটা পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে । পাশ্চাত্য দেশগুলোতে কিশোর ছেলেরা তার নিজ মায়ের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশে এ সম্পর্কিত কোনো আইন নেই।পৃথিবীর সব দেশেই ভাই-বোনের মধ্যে অবৈধ যৌন সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আমি এর মূল কারণ হিসেবে পর্ণোগ্রাফিকেই দায়ী করছি ।ইউরোপের দেশসমূহে মা-ছেলে যৌনসম্পর্ক অহরহ। বাংলাদেশেও পিছিয়ে নেই। যদিও সংখ্যায় কম।অনেকেই মনে করেন যে মা-ছেলে যৌন সম্পর্ক শুধু মনে হয় নিম্নবিত্ত, অশিক্ষিত পরিবারেই হয়। কিন্তু না৷ শিক্ষিতরা থেমে নেই৷ তারা বরং অনেক ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃতভাবেই এ ধরনের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে৷
ইন্ডিয়ায় মা-ছেলে যৌন সম্পর্ক ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইকোলজিতে মাস্টার্স করে বর্তমানে ইন্ডিয়ায় এম.ফিল করছেন এমন একজন গবেষক(নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) একটা জরিপে দেখেছেন যে ভারতে মা-ছেলে অবৈধ যৌন সম্পর্ক বাড়ছেই ।এর পিছনে তিনি যেসব কারণ খুঁজে পেয়েছেন, তা হলোঃ
১.অনেক মহিলার স্বামীই কাজের জন্য অন্য শহর বা বিদেশে থাকেন এবং তারই সুযোগ নেয় সন্তানেরা।
২.ভারতের অনেক স্বামীর ওপর সন্তুষ্ট নয় ভারতীয় মহিলারা, এইজন্য অনেক মহিলায় স্বেচ্ছায় নিজ সন্তানের সাথে যৌনতা উপভোগ করতে আপোষ করে না।
তবে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে শশুর আর পুত্রবধূর অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া খুব দুর্লভ কোনো ঘটনা নয়। এছাড়াও সহোদর ভাইবোনের মধ্যে অজাচার যে বেড়ে যাচ্ছে ক্রমাগত সেসব ঘটনা মিডিয়ায় না এলেও অনেকেই অকপটে স্বীকার করছেন৷ এমনসব ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে ভিজিট করুন www.quora.com সাইটে৷
সম্প্রতি পত্রিকায় প্রকাশিত কয়েকটা নিউজের হেডলাইন দেখলেই বুঝতে পারবেন বিষয়টির ছড়িয়ে পড়ার দৌরাত্ম্য৷
"আদিতমারীতে পুত্রবধূকে ধর্ষণের দায়ে শ্বশুর গ্রেফতার"।
"বাবা-মেয়ে যৌন সম্পর্কের পরিমান বাড়ছে দেশে"
"সৎ-ভাইয়ের সাথে দৈহিক সম্পর্কের ফলে কিশোরী অন্ত:স্বত্তা"
এর মূল কারণ হলো অনেক মহিলাই নিজের স্বামীর সাথে যৌনমিলনে উৎসাহী নয়।তারা স্বামীকে সময় দিতে পারে নাহ। এইজন্য অনেক পুরুষ নিজ জৈবিক চাহিদা পূরণে নিজ কন্যার সাথে যৌনমিলনে লিপ্ত হন। আবার কৈশোরে যৌনতার অজানা অধ্যায় আবিষ্কার করতে যেয়ে একই পরিবারের আপন ভাইবোন লিপ্ত হচ্ছে ইনসেস্ট নামক আদিম যৌনতা চর্চায়৷
লেখক: বার্তা সম্পাদক, দৈনিক নতুন বাজার ৭১.কম
|