আমেরিকা প্রবাসী শারমিনা সিরাজ সোনিয়াকে বিয়ে করেছেন সংগীতশিল্পী এস আই টুটুল। গত ১৮ জুলাই তাদের বিয়ের খবর প্রকাশ্যে আসে। বিষয়টি নিয়ে সে সময় বেশ আলোচনা হলেও পরবর্তীতে তেমন জলঘোলা হয়নি। তবে মাস পার হতেই ফের আলোচনায় উঠে আসে টুটুল-সোনিয়ার দাম্পত্য জীবন। এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন সংগীতশিল্পী পার্থ মজুমদার।
তিনি জানান, এখনও সোনিয়াকে বিয়ে করেননি এস আই টুটুল। তবে বিয়ের সম্ভবনা আছে। বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন পার্থ মজুমদার।
তার স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো-
ভেবেছিলাম কিছু লিখব না। এ বিষয় নিয়ে কোনো মন্তব্য করব না। বিষয়টা হলো এস আই টুটুল সংক্রান্ত। কয়েক দিন ধরে কিছু সংবাদ দেখছি, যা আমাকে ভাবতে বা লিখতে বাধ্য করল।
কেমন মানুষ এই এস আই টুটুল? আমাকে যদি প্রশ্ন করা হয়, আমি বলব, আমি ওকে কিছুটা চিনি, পুরোপুরি নয়। ১৭ বছর একসঙ্গে পথ চলেছি। এ দেশের এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে যাইনি। আমি আর ও (টুটুল) এক রুমেই থাকতাম। রাত গভীর হলে নিজেদের কথা শেয়ার করতাম। একটা সত্যি কথা সবার জানা উচিত বা জেনে রাখলে ভালো যে, মানুষের সঙ্গে রাত না-কাটালে তাকে ঠিক চেনা যায় না।
সংবাদগুলো দেখলাম, শুনলাম, কী সত্যি কী মিথ্যা, আমি ঠিক জানি না। জানতে চাইও না। কারণ, এটা সম্পূর্ণ তাদের ব্যক্তিগত ঘটনা। তানিয়া আমাকে নিজের বড় ভাইয়ের চেয়েও বেশি ভালোবাসে। আমাদের মাঝে এ বিষয়টা নিয়েও কথা হয়েছে। সেখানে কোনো রাগ বা বিদ্বেষ প্রকাশ পায়নি বরং বলেছে ও (টুটুল) যেভাবে ভালো থাকতে চায় থাকুক, আমি (তানিয়া) দোয়া করি।
যেহেতু আমি ওদের দুজনেরই কাছের, আমরা কথা বলতেই পারি। কথা হচ্ছে, একজন মানুষ তার ব্যক্তিগত জীবনে কী করছে তা, জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখার চেষ্টা করা রুচিহীন কাজ। আমি প্রয়োজনে টুটুলকে শাসন করার অধিকার রাখি। প্রয়োজন হলে করবও। আর দোষ? আমাদের কার ব্যক্তিগত জীবনে দোষ নাই? যার নেই, সে মহামানব। আমি টুটুলকে সরাসরি প্রশ্ন করেছি, তুমি কি বিয়ে করেছ? ও (টুটুল) আমাকে বলেছে না, করিনি। তবে হয়তো করব।
আমার কাছে তার লেখা আছে, কথা আছে, কিন্ত কারও বিশ্বাস করে লেখা নিজের একান্ত কথা প্রকাশ করার মত বেঈমানি আর কিছু নাই। তাই সে কাজটি করলাম না। আমি ওকে বলেছি, বিয়ে করলে করেছ, না করলে সেটা একান্ত তোমার ব্যাপার। আমার কাছে তুমি এমন করে বলছ কেন? ও (টুটুল) আমাকে বলেছে, দাদা আমি করিনি। আমি অন্তত তোমাকে মিথ্যা কথা বলবো না। এখন সে যদি মিথ্যা বলে থাকে, সেটা তার বিষয়।
হ্যাঁ, সবাই কর্মক্ষেত্রে স্বার্থ দেখে। কিছু ক্ষেত্রে সেও তাই, সে বিষয়ে না যাই। গত ১৭ বছরের চলার পথে আমার চোখের সামনে কখনও কাউকে চিট করতে দেখিনি। কারও অনিষ্ট করে টাকাপয়সা উপার্জন করতে দেখিনি। কিন্ত করে থাকলে আমি তা জানি না। সংবাদে দেখলাম, আমাদেরই আর এক ছোটবোন গায়িকাকে। এই সংবাদের অংশ হিসেবে তার সঙ্গে দেখানো হয়েছে, যা খুবই অশোভন। কি উদ্দেশ্যে, তা তারাই ভালো বলতে পারবেন।
বলা হচ্ছে, নতুন বউয়ের কাছে টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে,ব্যবসা করবে বলে; এটা আমার বিশ্বাস হয় না। আমি ওই টুটুলকে জানি না। এসব কথা অসম্মানজনক মনে হয়েছে। তবে মানুষ পাল্টে যায়। তা যদি করে থাকে, আমি আমাকেই ক্ষমা করতে পারবো না। আর কথায় কথায় মিডিয়ার মানুষ খারাপ, এটা কিন্তু অবিচার। আপনাদের কি মনে হয়, ওরা কেউ ভালো আছে মনের দিক দিয়ে? আজ ওদের নিয়ে হাসি ঠাট্টা করলে কি প্রমাণ হয়ে যাবে, যারা হাসছেন তারা মানুষ হিসেবে অনেক বড়? কখন যে কার কি হয়ে যায় কেউ কি বলতে পারে? ওরা সবাই আজ একা হয়ে গেছে। একটু সুখ বা একটু শান্তির আশায়। তাই সবাই পাশ থেকে সরে গেছেন। কি মজা ও না বিপদে পড়েছে! কি আনন্দ! শত্রুর প্রতিও সম্মান রাখতে হয়। আর সৃষ্টিকর্তাই জানেন, কি হবে আর কি হবে না। তাই এত উদাসীন হবেন না কেউ। কারও বিপদে কেউ হাসবেন না। এটা খুব বড় অপরাধ। কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল,প্রমাণিত ভাবে না জেনে, দিকভ্রান্ত হবেন না। আমি নিজেই জানি না আসলে কি হচ্ছে। ওদের দোষ হলে বিধাতা আছেন,তিনিই শাস্তি দিবেন!
পরিশেষে একটা কথা বলতে চাই, যা পড়বেন বা যা লোকমুখে শুনবেন, তা সবসময় সঠিক নাও হতে পারে। নিজেদের মধ্যে অনেক দ্বন্দ্ব থাকতে পারে। তাই বলে তাকে পাবলিকলি বলাটা দুর্বলতা। কত মানুষ একটু শান্তির জন্য, একটু ভালোবাসার জন্য নিরবে নিভৃতে কাঁদে, তার খবর কে রাখে বলেন তো? সেলিব্রেটিও কিন্ত ওই মানুষই। ভালো থাকুন সবাই, আমার কোনো ভুল হলে দয়া করে ক্ষমা করে দিবেন।’
|