পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ ভাগ শুল্ক আরোপের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার পেঁয়াজ রপ্তানিতে শুল্কায়ন মূল্য বাড়িয়েছে ভারত সরকার। এর ফলে পেঁয়াজ আমদানিতে খরচ যেমন বাড়বে তেমনি দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানিতে প্রভাব পড়বে তেমনি দেশের বাজারে পণ্যটির দাম বাড়বে বলে জানিয়েছেন বন্দরের আমদানিকারকগণ।শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাতে ভারতীয় পেয়াজ রফতানিকারকরা হিলি স্থলবন্দরের পেয়াজ আমদানিকারকগণকে মুঠোফোনে এই তথ্য জানিয়েছেন। আজ শনিবার (২৬ আগস্ট) থেকেই নতুন এই শুল্কায়ন মূল্য কার্যকর হবে বলেও ভারতীয় রপ্তানিকারকরা জানিয়েছেন।হিলি স্থলবন্দরেরর পেয়াজ আমদানিকারক মোবারক হোসেন বলেন, দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রেখেছেন বন্দরের আমদানিকারকগণ। এরই মাঝে ভারতে বন্যার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় সেদেশের বাজারেই পেয়াজের সরবারহ কমে গেছে। সে কারণে সে দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ও পেঁয়াজ রফতানি নিরুৎসাহিত করতে গত শনিবার ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানির ক্ষেত্রে ৪০ ভাগ শুল্ক আরোপ করে। কত টাকা শুল্ক দিতে হবে সেটি নিশ্চিত না হওয়ায় রোববার বন্দর দিয়ে নতুন শুল্ক আরোপের কোনো পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। কেজি প্রতি প্রকারভেদে ৫ থেকে ৭ টাকা শুল্ক পরিশোধ করতে হবে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ায় সোমবার থেকে আবারো বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। তবে কেজি প্রতি প্রকারভেদে ৫ থেকে ৭ টাকা বাড়তি শুল্ক দিতে হওয়ায় দেশের বাজারে পণ্যটির দাম কিছুটা বাড়ছিল। এরপরেও দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমদানি অব্যাহত রেখেছেন বন্দরের আমদানিকারকগণ।এরই মাঝে শুক্রবার (২৫ আগস্ট) পেঁয়াজ রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে ভারত সরকার।তিনি জানান, শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাতে ভারতীয় রফতানিকারকরা মুঠোফোনে সেই বিষয়টি আমাদের জানিয়েছেন। এতদিন পেঁয়াজ রফতানির ক্ষেত্রে আমরা যে ১৫০/২০০ মার্কিন ডলার মূল্যে পেঁয়াজের এলসি খুলতাম সেই মূল্যের ওপর ৪০ ভাগ শুল্ক পরিশোধ করেই পেঁয়াজ বাংলাদেশে রপ্তানি করতো ভারত। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তারা নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সেটি হলো যে মূল্যেই এলসি করা হোক না কেন ভারতীয় কাস্টমসে প্রতি টন পেঁয়াজের ৩২৫ মার্কিন ডলার শুল্কায়ন মূল্য ধরে শুল্ক পরিশোধ করেই পেঁয়াজ রফতানি করতে হবে। ভারতের কৃষি পণ্যের মূল্য নির্ধারণী সংস্থা নতুন এই শুল্কায়ন মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। আজ শনিবার (২৬ আগস্ট) থেকেই নতুন এই শুল্কায়ন মূল্য কার্যকর হবে বলে ভারতীয় রফতানিকারকরা আমাদের জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, পুরানো বা নতুন সব এলসির ক্ষেত্রেই এই শুল্কায়ন মূল্য পরিশোধ করতে হবে। এর ফলে বর্তমানে পেঁয়াজের কেজি প্রতি যে প্রকারভেদে ৫-৭ টাকা শুল্ক পরিশোধ করতে হতো সেটি বেড়ে ১১ টাকার মত পরিশোধ করতে হবে। সেটিই ফিক্সড কিনা এখনো নিশ্চিত নয় এটি আজ শনিবার পরিস্কার হওয়া যাবে। এটি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আজ বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি নাও হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। এটি নিশ্চিত হওয়ার পরেই বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হতে পারে। তবে এই শুল্কায়ন মূল্য বাড়ানোর ফলে পেঁয়াজ আমদানিতে খরচ যেমন বাড়বে তেমনি দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়বে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ, পেঁয়াজ রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কায়ন মূল্য ৩২৫ মার্কিন ডলার করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে এ বিষয়ে কোনো নোটিফিকেশন এখনো পাওয়া যায়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি। আজ বিষয়টি পরিস্কার হওয়া যাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।