মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের পদ্মা নদী থেকে অপহৃত দুই জেলেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মহিলাসহ দুইজনকে আটক করা হয়েছে। সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তাদের উদ্ধার করা হয়।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো রোববার রাতে লৌহজংয়ের পদ্মায় মাছ ধরতে যায় লৌহজংয়ের সিংহের হাটির সিরাজুল (৪৫) ও ঝাউটিয়ার ভাসানী (৬০)। রাত আড়াইটার দিকে তারা লৌহজংয়ের কলমা ইউনিয়নের ভরাকর এলাকার পদ্মায় মাছ শিকার করছিল। এসময় ৭/৮ জনের একদল জলদস্যু তাদের অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে তারা এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ না দিলে তাদের মেরে ফেলা হবে জানায় অপহরণকারীরা।
পরে পরিবারের সঙ্গে অপহরণকারীরা মোবাইলে যোগাযোগ করলে তারা ২৫ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে অপহরণকারীদের পাঠায় মুক্তিপণ হিসেবে। কিন্তু তাতে তারা খুশি হতে পারেনি। বাকি টাকা পাঠাতে চাপ সৃষ্টি করে ও অপহৃতদের মারধর করে। জেলে পরিবারগুলো অবশেষে বিষয়টি স্থানীয় কনকসার ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে জানালে চেয়ারম্যান বিষয়টি লৌহজং থানার ওসি আলমগীর হোসাইনকে জানান।
পরে লৌহজং থানা পুলিশ ও মাওয়া নৌ ফাঁড়ি পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপহৃতদের উদ্ধার করে।
মাওয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আইসি পরিদর্শক সিরাজুল কবির বলেন, থানা পুলিশের কাছ থেকে বিষয়টি অবগত হয়ে যৌথ অভিযান চালাই আমরা। নৌ পুলিশের এসপি অফিসের সহযোগিতায় যে নাম্বারে বিকাশ পাঠানো হয়েছিল, আমরা তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ওই নাম্বারটি শনাক্ত করি। এবং মুন্সীগঞ্জের সদরের বাংলাবাজার মহেশপুরের বানিয়াল পশ্চিমকান্দি মোবাইটির মালিক পারভীর বেগম (৫০) ও রাসেল নামে ২ জনকে আটক করি। পরে এ খবর অপহরণকারীদের কাছে পৌঁছালে তাদের একজনের মাকে ছেড়ে দেওয়ার শর্তে অপহৃতদের ছেড়ে দেয়।
উদ্ধার হওয়া ভাসানী জানায়, ৭/৮ জনের একটি জলদস্যু দল তাদের পদ্মা নদী থেকে অপহরণ করে হাতপা ও চোখ বেঁধে ফেলে। পরে তাদের বাংলাবাজার এলাকার পদ্মার কালি চরে কাশবনে আটকে রাখে। পুলিশ অপহরকারীদের একজনের মাকে আটক করলে আমাদের ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা। এবং পেছন দিকে ফিরে তাকালে গুলি করবে বলে হুমকি দেয়। আমরা চর থেকে ট্রলার যোগে নদী পার হয়ে টঙ্গীবাড়ির দিঘিরপাড় বাজারে আসি। সেখান থেকে পুলিশ আমাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
কনকসার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ জানান, একটি সংঘবদ্ধ জলদস্যু দল দীর্ঘদিন ধরে পদ্মায় দস্যুতা করে আসছে। মাঝে মধ্যেই জেলেদের জাল, নৌকা ও টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। জেলেরা নিরাপদভাবে পদ্মায় মাছ ধরতে পারছে না।
লৌহজং থানার ওসি আলমগীর হোসাইন জানান, খবর পেয়ে নৌপুলিশকে নিয়ে যৌথ অভিযান চালিয়ে অপহৃতদের উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।