অরক্ষিত রেললাইনের কারণে সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে দ্বিধা
9, March, 2022, 10:37:15:PM
অরক্ষিত রেললাইন, ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার আর রেল ওভারব্রিজ না থাকাতেই ট্রেনে কাটা পড়ে কুমিল্লায় তিন ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।
তারা বলছেন, এর আগেও এ রকম দুর্ঘটনা ঘটলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। রেলওভার ব্রিজ ও স্কুলের অংশে কাঁটাতারের বেড়া না হওয়া পর্যন্ত সন্তানদের স্কুলে না পাঠানোর কথাও বলেছেন অনেক অভিভাবক।
স্কুলের পড়ে থাকা ব্যাগ, ছিটকে পড়ে আছে টিফিনবক্সের খাবার। আর পঞ্চম শ্রেণিন তিন ছাত্রীর মরদেহ পড়ে আছে রেললাইনের পাশে।
এমন দৃশ্য বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার বিজয়পুর রেলক্রসিংয়ের ১০০ গজ উত্তরে স্কুলে যাওয়ার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে তিন স্কুলছাত্রী নিহতের পরপর।
ওই তিন স্কুলছাত্রী প্রতিদিনের মতো এদিনও স্কুলে যাচ্ছিল। বিজয়পুর এলাকায় রেললাইন পার হওয়ার সময় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী দ্রুতগতির একটি ট্রেনে তারা কাটা পড়ে।
এ ঘটনার জেরে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ ও কুমিল্লা-নোয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। দিনভর উত্তাল ছিলো কুমিল্লা। রেললাইনে আগুন জ্বেলে চলে প্রতিবাদ।
অন্যদিকে, একসঙ্গে তিন শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গ্রামজুড়ে চলছে শোকের মাতম। এলাকাবাসী জানলেন, সুরক্ষার অভাবেই হয়েছে এমন জীবনহানী।
নিহতরা হলো- বিজয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মীম, রিমা আক্তার এবং তাসফিয়া আক্তার।
স্বজনরা বলছেন, রেললাইনের পাশে স্কুল অথচ পারাপারে সতর্কতামূলক কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তারা মনে করের অবহেলায় তৈরি মৃত্যুফাঁদেই প্রাণ দিতে হয়েছে তিন শিশুকে।
তাসফিয়ার মা রোজিনা আক্তার বলেন, মীম, রিমা এবং তাসফিয়া ছোট থেকেই একসঙ্গে খেলাধুলা ও পড়ালেখা করতো। আজ শেষ বিদায় নিয়েছে একসঙ্গে।
তবে, রেল পুলিশের সুরক্ষা পরিদর্শক এয়াসিন উল্লাহ’র মতে, এসব ঝুঁকিপূর্ণ পারাপারে সচেতনতার বিকল্প নেই।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান। প্রতি পরিবারকে দেয়া হয়েছে ২৫ হাজার করে টাকা। সেই সঙ্গে দুর্ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলেও তিনি জানান।