মানিকগঞ্জে জীবিত এক নবজাতককে উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় এক দম্পতি সোমবার সকালে সদর উপজেলার দিঘী ইউনিয়নের ভাটবাউর এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে। নবজাতককে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।সদর উপজেলার ভাটবাউর গ্রামের সামছুন্নাহার বেগম ও তাঁর স্বামী জালাল উদ্দিন নবজাতককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।এ বিষয়ে সামছুন্নাহার বেগম এনটিভিকে বলেন, ‘আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমি ও আমার স্বামী বাড়ির কাছে খাল থেকে গরুর খাদ্যের জন্য কচুরিপানা তুলতে যাচ্ছিলাম। এ সময় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধারে খাদের পাশে ওড়না দিয়্যা দুই পাশে বান্ধা অবস্থায় কিছু একটা দেখলাম। হঠাৎ দেখি একটা পা বের হইয়্যা আছে। তখন আমি আর আমার বাড়িওয়ালা (স্বামী) কাছে গিয়্যা দেখি, এই বাচ্চাটা। লগে লগে বাচ্চাটা নিয়ে বাড়িতে আসি এবং তখনও পর্যন্ত বাচ্চাটার নাড় কাটা হয় নাই। স্থানীয় ফায়ার চাচি-খালারা মিল্যা বাচ্চাটার নাড় কাটে এবং সুন্দর করে ধুয়ে মুছে সাফ করে দেয়। এর মধ্যে আমাগো মেম্বার ও চেয়ারম্যানও বিষয়টা জানতে পারেন। চেয়ারম্যান পরামর্শ দেন, বাচ্চাটাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য। পরে দুপুর ১টার দিকে বাচ্চাটাকে হাসপাতালে ভর্তির জন্য আনি এবং এখন আল্লাহর রহমতে বাচ্চাটা ভালো আছে।’
তিন ছেলের মা সামছুন্নাহার আরও বলেন, ‘আমার কোনো মেয়ে নাই। আমি এই মেয়েকে কুড়াইয়্যা পাইছি। সরকারের অনুমতি পাইলে আমিই ওরে পালুম (অভিভাবকত্ব)।’
সামছুন্নাহারের তিন ছেলেরও দাবি, তারা এই মেয়েকে অন্য কাউকে দেবে না।
মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক শহীদুল আজম বলেন, ‘দুপুর ১টার দিকে বাচ্চাটাকে নিয়ে ওই নারী (সামছুন্নাহার) জরুরি বিভাগে ভর্তি করাতে আসেন। বাচ্চাটির প্রসবকালীন পরবর্তী ধাপ নাড় কাটার কাজটিও সম্ভবত স্থানীয়দের দ্বারা সম্পন্ন করা হয়েছে। বাচ্চাটার শারীরিক অবস্থা এখন ভালো আছে।’
অপরদিকে এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি অভিভাবকত্ব নিতে চাইলে তাকে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের মাধ্যমে নিতে হবে। এ ঘটনায় নবজাতকের চিকিৎসার জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা লাভলী খানম বলেন, নবজাতককে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। উপযুক্ত অভিভাবক পাওয়া না গেলে নবজাতককে সুরক্ষা দিতে ‘সেফ হোমে’ পাঠানো হবে।