করোনা মহামারির অর্থনৈতিক ধকল কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশকে ২৫ কোটি মার্কিন ডলার নীতিভিত্তিক ঋণ সহায়তা দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক(এডিবি)।শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে ব্যাংকটি জানিয়েছে, টেকসই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কর্মসূচির ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের প্রথম কিস্তি হিসেবে এই অর্থ দেওয়া হবে।
যত দ্রুত সম্ভব করোনা মহামারির অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠা, কর্মসংস্থান তৈরি ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্ত থেকে ছোট ব্যবসার সম্প্রসারণ ঘটাতেই এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
এডিবি বলছে, নীতি সংস্কারের মাধ্যমে এই কর্মসূচি কার্যকর করা হবে। যাতে, ক্ষুদ্র, কুটির, ছোট ও মাঝারি আকারের উদ্যোক্তা (সিএমএসএমইএস)-সহ জনগণের ব্যয় বাড়ানো যায় এবং নতুন রাজস্বের সুযোগ তৈরি হয়।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষা, অবকাঠামো খাতে সরকারি বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক তৎপরতা ও পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা থেকে দেওয়া হচ্ছে এই ঋণ সহায়তা।
এডিবির প্রধান অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ শ্রীনিভাষণ জানার্দানাম বলেন, এই কর্মসূচির অধীন সরকারের নতুন রাজস্বের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া সামাজিক, অর্থনৈতিক ও অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে সুযোগ করে দেবে।
তিনি বলেন, এই ঋণ সহায়তায় সরকারি বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়াবে। বিশেষ করে দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণদের ঋণ সহায়তায় প্রবেশের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করবে।
রাজস্ব স্থায়িত্ব বাড়াতে মারাত্মকভাবে প্রয়োজনীয় স্বাভাবিক ও সামাজিক অবকাঠামোরর সীমাবদ্ধতা দূর করতে এই কর্মসূচি সরকারকে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছে এডিবি।
এছাড়া ২০২১-২২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আগের প্রাক্কলন কমিয়ে ছয় দশমিক আট শতাংশ করেছে ম্যানিলাভিত্তিক ব্যাংকটি। গত এপ্রিলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটি সাত দশমিক দুই শতাংশ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) পূর্বাভাস দিয়েছিল। সরকারও একই ধরনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল।
বিশ্বব্যাংক বলছে, ২০২১-২২ রাজস্ব বছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে পাঁচ দশমিক এক শতাংশ।
কেবল বাংলাদেশ নয়, প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন পুরো দক্ষিণ এশিয়ার জন্যই কমিয়েছে এডিবি। আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার সম্মিলিত প্রবৃদ্ধির প্রক্ষেপণ এপ্রিলের ৯ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ ধরা হয়েছে।
প্রক্ষেপণ কমিয়ে আনার মূল কারণ করোনাভাইরাসের সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ। যা এ বছর পুরো দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে দারুণভাবে ব্যাহত করেছে। করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ডেল্টা ধরনের প্রাদুর্ভাবে এ বছরও কয়েক দফা লকডাউনের বিধিনিষেধ দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
পাশাপাশি টিকাদানের ধীরগতির কারণেও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কাঙ্ক্ষিত গতি পাচ্ছে না বলে এডিবি মনে করছে।