জ্বালানি তেল ও এলপি গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশের কয়েকটি রাজনৈতিক দল। বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো পৃথক প্রতিক্রিয়ায় দলগুলো অবিলম্বে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি থেকে সরে আসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদ প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, ডিজেল, কেরোসিন ও এলপিজি গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ফলে কৃষি উৎপাদনে সেচ খরচ বাড়বে, ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে পরিবহনে যাত্রী ভাড়া ও পণ্য পরিবহন ব্যয় বাড়বে। এলপিজির দাম বৃদ্ধিতে পরিবহন ও গৃহস্থালিতে, হোটেল-রেস্টুরেন্টে রান্নার ব্যয় বাড়বে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত সাধারণ জনগণ।
খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের যখন নাভিশ্বাস উঠছে, ঠিক সেই সময়ে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম হঠাৎ করে ২৩% বৃদ্ধি করে জনগণের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে।’
ভারতে শুল্ক কমিয়ে জ্বালানি তেলের দাম কমানো হয়েছে আর আমাদের দেশে মূল্য বৃদ্ধি করা হলো— উল্লেখ করেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘বিপিসিকে তেল আমদানি করতে ৩ ধরনের শুল্ক ও ট্যাক্স প্রদান করতে হয়, যা কমালে তেলের দাম বৃদ্ধি না করে কমানো সম্ভব। কিন্তু সরকার লোকসানের দোহাই দিয়ে জনগণের পকেট কাটার দিকেই মনোযোগী বেশি, যা অত্যন্ত অযৌক্তিক ও গণবিরোধী।’
ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধি আত্মঘাতী বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া। বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রীদের কর্মকাণ্ড ও অবস্থান দেখলে মনে হয়, তারা দেশের জনগণ নয়, লুটেরা গোষ্ঠীর স্বার্থরক্ষায় ব্যস্ত। ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য বৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্ত জনবিরোধী।’
বাসদ (মার্কসবাদী)-এর ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী ফখরুদ্দিন কবির আতিক উল্লেখ করেন, ‘অসংখ্য মানুষ কাজ হারিয়ে বেকারত্বের বোঝা বহন করছে। সংসার চালানোই হয়ে পড়েছে দুষ্কর। এই অবস্থায় সরকার পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি রোধে কার্যকর কোনও ব্যবস্থা তো নেয়ইনি, উল্টো এখন ডিজেল-কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধির মধ্য দিয়ে পণ্যমূল্য আরও বৃদ্ধির পথ করে দিলো। ফলে জীবনযাপন ব্যয় আরও বাড়বে। জনগণের জীবন হয়ে উঠবে দুঃসহ।’
এছাড়া বিবৃতিতে প্রতিবাদ জানিয়েছেন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতির সভাপতি হাফিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান কবির। ইসলামি আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলন ও জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টও প্রতিবাদ জানিয়েছে জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে। এদিকে, ডিজেল-কেরোসিনের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে শুক্রবার (৫ নভেম্বর) বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি ডেকেছে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল।