নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জে মা-মেয়েকে ছুরিকাঘাত ও কুপিয়ে হত্যা মামলার গ্রেপ্তারকৃত আসামি আল জুবায়েরকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। বুধবার বিকালে পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে নারায়ণগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠায়। জুডিশিয়াল ম্যাজিসেট্রট মোহাম্মদ নূর মহসিন এর আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে সকালে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত রুমার স্বামী রাম প্রসাদ চক্রবর্তী।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় এ হত্যা মামলা করেন রাম প্রসাদ। তিনি নিহত রুমা চক্রবর্তীর স্বামী ও নিহত ঋতু চক্রবর্তীর বাবা।নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা ওসি শাহ জামান, হত্যা মামলার একমাত্র আসামি জুবায়েরকে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে আনা হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য বেড়িয়ে আসবে।
মামলায় বলা হয়, দুপুর আড়াইটার পর মামলার বাদী খবর পান তার ভাড়া ফ্লাট বাড়ির সামনে অনেক লোকজনের জমায়েত। তিনি গিয়ে দেখেন ভাড়া বাসার নিচ তলার গেটের তালা বন্ধ। তার ছেলে হৃদয়ের স্ত্রী ফারজানা আক্তার শিলা (২৫) নিচ তলার সিড়ির নিচে গেটের ভেতরে দাঁড়িয়ে কান্নাকাটি করছে। শিলা ভেতর থেকে রাম প্রসাদকে জানায় ৬ষ্ঠ তলার ভাড়া ফ্লাটে অজ্ঞাতনামা একজন পুরুষ প্রবেশ করে রুমা চক্রবর্তী (৪৬) ও মেয়ে ঋতু চক্রবর্তীকে ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে। শিলাকে রান্না ঘরে থাকা বটি দিয়ে হত্যার চেষ্টা করলে তিনি কৌশলে বটি ধরে ফেলেন। পরে বটি নিয়ে ভবনের নিচে নেমে যান। তখন হত্যাকারী তার পেছনে পিছনে ধাওয়া করে নিচে নেমে আসে। কিন্তু ভবনের মেইন গেইটের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ থাকায় শিলা বাইরে আসতে না পেরে গেইটের তেভতরে বটি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলে হত্যাকারী পুনরায় ৬ষ্ঠ তলার ফ্লাটে চলে যায। পরে রাম প্রসাদ তার স্ত্রীর মোবাইলে ফোন করেন তখন ফোনটি রিসিভ করে করেন জুবায়ের। সে বলে বাসায় নগদ টাকা ও সোনা গয়না কোথায় আছে বল না হইলে তোর বাসার সবাইকে মেরে ফেলব। তার পরিচয় জানতে চাইলে সে ফোন কেটে দেয়। এমন সময় থানা পুলিশ গিয়ে গেটের তালা খুলে ৬ষ্ঠ তলার ফ্লাটে গিয়ে দেখে রুমা চক্রবর্তী ও অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে ঋতু ড্রয়িং রুমে ফ্লোরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। পুলিশ তাৎক্ষণিক জুবায়েরকে আটক করে। তখন জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, প্রত্যেকটি ফ্ল্যাটের কলিং বেল চেপে দরজা খোলার চেষ্টা করেছে কিন্তু তারা খোলেনি। বাসার স্টিলের আলমারির মালামাল ও ড্রয়ার খুলে এলোমেলো করে রাখে হত্যাকারী। নিহত রুমার মেয়ের গলায় ও কানে
পরে থাকা ২টি স্বর্ণের চেইন, কানের দুলখুলে নিয়ে তার ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখে।
মামলায় আরও বলা হয়, মা ও মেয়েকে হত্যা করে লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকারসহ পালানোর চেষ্টা করে ওই যুবক। তবে ভবনের মূল গেইট বাহির থেকে বন্ধ থাকায় পালাইতে পারে নাই। গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনা সংক্রান্তে স্বীকারোক্তিমুলক বক্তব্য পাওয়া গেছে।