সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি ঃ রংপুরের কাউনিয়ায় তীব্র তাপদাহ ও বৈরী আবহাওয়ার পরেও চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কাউনিয়ায় অধিকাংশ কৃষক তাদের উৎপাদিত ধান মাড়াই শেষে ঘরে তুলেছেন। বর্তমানে গ্রামীন জনপদের প্রায়ই বাড়িতে ধান মাড়াই করার পর চলছে ধান সিদ্ধ ও শুকানোর উৎসব। ফলে গ্রামবাংলার প্রতিটি পরিবারের নারী-পুরুষ শিশুসহ সকলেই ধান শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। যদিও ধান সিন্ধ ও শুকানো দিন দিন কমে যাচ্ছে বিভিন্ন চালকলের কারণে। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ধান মাড়াইয়ের পর গ্রামীণ নারীরা চুলায় বড় হাড়িতে সিদ্ধ করছে। আর এই ধান সিদ্ধ চলছে বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত। পরে খুব সকালে কেউ ভ্যানে কেউবা সাইকেল যোগে বস্তায় এই সিদ্ধকৃত ধান শুকানোর জন্য বিস্তীর্ণ মাঠে নিয়ে যায়। তবে এই সিদ্ধ ধান শুকানোর জন্য মাঠে দেওয়ার আগে বড় আকারের নেট বিছানো হয়। তারপর সেই নেটে দেওয়া হয় সিদ্ধকৃত ধান। এ অবস্থা বর্তমানে চরাঞ্চলসহ প্রত্যন্ত বিভিন্ন গ্রামে। এ ব্যাপারে চরগকুন্ডা গ্রামের রহেলা বেগম বলেন, এক বিঘা ধান মাড়াই করার পর সেই ধান সিদ্ধ নিয়ে এসেছি। বাড়িতে ধান শুকানোর তেমন জাগায় নেই, দিনের অল্পসময়ে ছায়া চলে আসে, আকাশের অবস্থা ভালো না। অল্প পানিতেই কাদা হয়, তাই সেতুর কাছে নিয়ে এসেছি। এখানে ধান শুকাতে কম বেশি সারাদিনের রোদ পাওয়া যাবে। কোনও প্রকার ঝামেলা হয় না। আর ফিল্টার নেটে ধান শুকাতে সুবিধা বেশী। ঢুসমারা গ্রামের কৃষক তাজুল বলেন, আগে গ্রামের প্রতিটি বাড়ির উঠানে ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ করা হতো। কিন্তু বর্তমানে গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে ফাঁকা জায়গার অভাব। সেই কারণে নদীর পাড়, স্কুল মাঠ কিংবা ফসলি মাঠের ফাঁকা জায়গায় নেট (জাল)-এর উপর ধান শুকানো হচ্ছে। ফলে ফিল্টার নেটের চাহিদা ও ব্যবহার বেড়েছে অনেক বেশী। ব্যবসায়ী প্রহলাদ চন্দ্র জানান, বেড়েছে ফিল্টার নেটের চাহিদা, ব্যবহার হচ্ছে ধান শুকানো কাজে তাই বিক্রি হচ্ছে ভাল। কৃষকরা ফিল্টার নেট দিয়ে ধান শুকানোর কাজে ব্যবহারে করে থাকে, তাই এর চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। এই ফিল্টার নেট ভিন্ন ভিন্ন কাজে লাগলেও ধানের কাটার মৌসুমে এর চাহিদা দ্বিগুণ হয়ে যায়। কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া আক্তার জানান, জানান আগে কৃষক উঠানে বা মাঠে ধান শুকাত, এখন ফিল্টার নেট ব্যবহার করে ধান শুকানো হয়, এ নেট ব্যবহার করে ধান শুখালে ধানে কোন প্রকার ময়লা থাকে না। ধানের দামও বেশি পায়।