হারিয়ে যেতে বসেছে মৃৎ শীল্প,মহেশপুরে ভালো নেই মৃৎশিল্পীরা।
20, December, 2022, 8:25:28:PM
মোঃ আবু সুফিয়ান শান্তি
ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধিঃ
হারিয়ে যেতে বসেছে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মৃৎশিল্প। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমে আলোচনার বাইরে চলে যাচ্ছে বাংলার এই ঐতিহ্য।
কয়েক বছর আগেও মৃৎশিল্পীদের তৈরি মাটির তৈজসপত্রের ব্যাপক চাহিদা ছিল দেশ-বিদেশে। সেই চাহিদা পূরণ করতে রাতদিন পরিশ্রম করতে হতো মৃৎশিল্পীদের। সাম্প্রতিক অবস্থায় তাঁদের মাথায় হাত। আধুনিকতার ছোঁয়ায় ও কালের বিবর্তনে প্লাস্টিক ও সিলভারের পণ্য চাহিদা বেড়ে যাওয়ায়।বেকার হতে বসেছে এই কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিশাল এক জনগোষ্ঠী।
মহেশপুর উপজেলার প্রতান্ত অঞ্চলের শ্যামকুড় কুমারপাড়ার মৃৎশিল্পীরা এখন অনেকটাই অলস সময় পার করছেন বলেযানা যায় । যুগ যুগ ধরে তাঁদের পূর্বপুরুষ যে পেশায় নিয়োজিত ছিলেন, কালের আবর্তে তা আজ মৃতপ্রায়। পূর্বপুরুষের পেশা পরিবর্তন করে তাঁরা অন্য পেশার আশ্রয় নিচ্ছেন জীবিকা নির্বাহের তাগিদে। হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার ছাড়া কোনো বাড়িতেই এখন মাটির তৈজসপত্র দেখা যায় না। কুমার বাড়ির সেই চাকাও খুব একটা বেশি ঘুরে না।
শ্যামকুড় এলাকার কুমারপাড়ার বাসিন্দা কালিপোদ পাল জানান, বাপ-দাদার আমল থেকে এই পেশায় নিয়োজিত। ছোটবেলায় দেখেছি এই পেশার রমরমা ব্যবসা। ব্যাপক চাহিদা ছিল এসব পণ্যের। পার্শ্ববর্তী মাঠ থেকে মাটি সংগ্রহ করে সেই মাটি দিয়ে তাঁরা তৈরি করতেন ঘোড়া, পুতুল, হাতি,জিরাফ, টিয়াপাখি,মোরগ, মাছ সহ নানা পণ্য ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য থেকে শৌখিন খেলনা বা ঘর সাজানোর উপকরণ- সবই ছিল তার মধ্যে।
স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব সরবরাহ করা হতো দেশের বিভিন্ন এলাকায়। দেশের বাইরেও এসব পণ্যের চাহিদা ছিল। এখন আর সে রকম ব্যবসা নেই। বড় কোনো অর্ডারও আসে না। মহেশপুর উপজেলায় শ্যামকুড় পাল পাড়ার মাটির পন্য সামগ্রি বিক্রেত কালিপদো পাল বলেন, কয়েক বছর আগের হাতে গড়া মাটির পন্যের ব্যাপক চাহিদা ছিল। এখন আর তেমনটা নাই। আগে সারা দিনে ১২০০-১৫০০ টাকা বিক্রি করতাম।
এখন ১৫০-২০০ টাক বিক্রি হয়। এখ ন খুব কম বেচাকিনা তারপরও বাপ দাদার পেশা ভুলতে পারিনা। পরবর্তী প্রজন্ম এই পেশায় থাকলে না খেয়ে মরবে। দেশের উন্নয়ন হচ্ছে, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে ভালো কথা, সেটা তাঁরাও চান। তবে তাঁদের প্রত্যাশা বাংলার এই ঐতিহ্যও যেন টিকে থাকে সেই সঙ্গে।
এই শিল্প যাতে পরবর্তী প্রজন্মের কাছ থেকে চিরতরে বিলীন হয়ে না যায়। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা রক্ষা পেতে পারে এ শিল্প। তাই তাদের দাবি সরকারের পক্ষ থেকে দেখভাল করে সহায়তা করলে এই পেশা টি কে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব বলে মনে করেন তারা।