সংস্কার ও সংরক্ষনের অভাবে কাউনিয়ায় বিলীন প্রায় ৮শ বছরের প্রাচীন নান্দনিক শিব মন্দির
9, August, 2023, 6:34:16:PM
সারওয়ার আলম মুকুল
কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি ঃ
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের ভায়ার হাটে শিব প্রসাদ মিত্রের তৈরী শিব মন্দির টি সংস্কার ও সংরক্ষনের আভাবে বিলিন হয়ে যাচ্ছে । এ যেন দেখার কেউ নেই।
সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, আজ থেকে প্রায় ৮শ বছর পূর্বের কথা, স্বর্গিয় শিব প্রসাদ মিত্র এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের শিব দেবতার পূঁজা করার জন্য নিজ উদ্যোগে ভায়ারহাট বাজারের পাশে পৌনে ৮ শতক জমির উপর নানা কারু কার্যে খচিত নান্দনিক শিব মন্দিরটি নির্মাণ করেন। শিব প্রসাদ মিত্র মারা গেলে তার উত্তরসূরী রাম প্রসাদ মিত্র মন্দিরের দেখা শুনার ভার নেন। এরপর কালী পসাদ মিত্র, অম্বিকা প্রসাদ মিত্র, ভবানি প্রসাদ মিত্র, হর প্রসাদ মিত্র পর্যায় ক্রমে দায়িত্ব পালন করেন। হর প্রসাদ মিত্রের মৃত্যুর পর দেশে যুদ্ধ শরু হলে তার দুই ছেলে অন্নদা প্রসাদ মিত্র ও সুখদা প্রসাদ মিত্র স্বপরিবারে ভারতে চলে যান। স্বাধীনতার পর দেশে ফিরে এসে দেখেন মন্দিরের ভিতরে থাকা মূর্তি গুলো পাক হানাদার বাহিনী ভেঙ্গে স্বর্ণালংকার সব নিয়ে গেছে। সেই থেকে আর পুঁজা হয় না এ মন্দিরে। নান্দনিক সৌন্দর্যে ভরা পুরাকৃর্তির এ মন্দির টি স্বাধীনতার ৫২ বছরেও সংরক্ষন ও সংস্কার না করায় এটি ভুতরে মন্দিরে পরিনত হয়েছে। মন্দিরের গায়ে গাছ জন্মে পাহাড় আকার ধারন করেছে। মন্দিরের দামি ইট গুলো খুলে নিয়ে যাচ্ছে এলাকার মানুষ। ইতি মধ্যে মন্দিরের জমি বেদখল হয়ে গেছে। এ ব্যপারে অন্নদা প্রসাদ মিত্রের ছেলে সুবোধ কুমার মিত্র ঝানু বাবুর কাছে জানতে চাইলে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এ সব বলে কি হবে যে দেশে ঐতিহ্য রক্ষায় কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না, সেখানে আমাদের কথায় কি ফল হবে। এ বিষয়ে অনেক বলেছি, বলতে বলতে মন্দিরই ধ্বংশ হয়ে যাচ্ছে। গত ২৩ জানুয়ারী ২০১৩ সালে জেলা প্রশাসক রংপুর ফরিদ আহম্মদ ভায়ার হাট বাজারে কেয়ার বাংলাদেশ এর সোহার্দ্য-২ কর্তৃক নির্মিত হাটের সেড এর উদ্বোধন কালে সাংবাদিক সারওয়ার আলম মুকুল মন্দির টি সংরক্ষনের দাবী জানালে, তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল মোতালেব সরকার কে মন্দিরের প্রকৃত ইতিহাস তৈরী করে তার দপ্তরে প্রেরনের নির্দেশ প্রদান করেন এবং ঢাকায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বিষয়টি জানানো প্রতিশ্রæতি দেন। কিন্তু তার আজও কার্যকরী হয় নি। এলাকা বাসী মন্দির টি সংরক্ষনের জন্য জেলা প্রশাসকের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করে ছেন।