ঋণ সহয়াতার দাবী কাউনিয়ায় পানের আড়ৎ কে কেন্দ্র করে জীবন চলে ৪শতাধিক পরিবারের
28, September, 2024, 6:02:12:PM
সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি ঃ কুষ্টিয়া, রাজশাহী, গাইবান্ধার রং-বেরঙের পানের জন্য কাউনিয়ায় দুইটি পানের আড়ত রংপুর জেলায় বিখ্যাত। রাজশাহী, ভেড়ামারা, কুষ্টিয়া, গাইবান্ধার পান এই আড়তে আসে। কাউনিয়া রেল স্টেশন ও বাসস্টান্ড মোড়ে এই দুই পানের আড়ত থেকে পান রংপুর জেলাসহ পার্শ্ববর্তী জেলার বাজারেও এখান থেকে সরবরাহ করা হয়। সরেজমিনে কাউনিয়া রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে পান আড়ৎদারের সাথে কথা বলে জানাগেছে, পাকিস্তান আমল থেকে ট্রেনে করে পান আসত। বর্তমানে সে বাজার এখন ছোট হয়ে আসছে। কেবল ট্রাকে করে ১৫ থেকে ১৬ খাচা পান আসে। একটি খাচায় ৮০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ বিড়া পান থাকে। প্রতিদিন প্রায় ১ লাখ ৪৪ হাজার বীরা পান বিক্রি হয়। প্রতি খাচা পানের দাম বর্তমান বাজারে ১৭ থেকে ২০ হাজার টাকা। রেলওয়ে স্টেশনের পান আড়ৎদার এমদাদুল জানান কাউনিয়ায় ২টি পান আড়তে প্রতিদিন ৩ থেকে ৫ লাখ টাকার পান বিক্রি হয়। এই উপজেলায় কুষ্টিয়া ভেড়ামারা, চুয়াডাঙা ও রাজশাহীর পানের চাহিদা বেশী। কোথাও পানের ৮০টিতে ১ বিড়া হয়, আবার কোথাও ৬৪টিতে এক বিড়া। রাজশাহীর পান মহেশখালীর মতো মিষ্টি নয়, তবে বরিশালের মতো ঝালও নয়। মিষ্টি পানের পাতা ছোট, মোটা, নরম ও লম্বাটে হয়। বাসস্টান্ডের পান আড়ৎদার সাইদুল জানান, শীতকালে সরবরাহ কম থাকায় পানের দাম চড়া থাকে। পানের সরবরাহ বেশি থাকে আষাঢ়ে। পান গাছে কমপক্ষে ষোলোটি পান রেখে বাকি পান তুলে নেওয়া যায়। অঞ্চলভেদে আকারে, প্রকারে, গন্ধে, স্বাদে পান হয় ভিন্ন ভিন্ন। যেমন পার্বত্য অঞ্চলে তাদের উৎপাদিত পান খাসি পান নামে পরিচিত। তারা জানান এই পান ব্যবসার সাথে জরিত রয়েছে প্রায় ৪০০ পরিবার। পান সুপারি বিক্রি করেই তাদের সংসার চলে। এছাড়া দুই আড়তে কাজ করে ১০জন কর্মচারী। তারা পান ব্যবসায়ীদের জন্য স্বল্প লাভে সরকারী ভাবে ঋণ সহয়াতার দাবী জানিয়েছেন। বর্তমানে পানের বাজার মূল্য ২০টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। পান ক্রেতা মজিবর রহমান জানান, স্থানীয় ভাবে পান চাষের কোন উদ্যোগ নেই, এখানে পান চাষ হলে আমরা কম দামে পান খেতে পারতাম। জানাগেছে বাংলার দেওয়ানি লাভের পর রবার্ট ক্লাইভ ১৭৬৭ সালে পান চাষকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া ব্যবসায় পরিণত করেন। পানের গুণেরও শেষ নেই। সর্দি-কাশি কমাতে পান ভালো দাওয়াই। হজমে সাহায্য করে পান। তাই তো ভোজের পরে পান খাওয়ার চল আছে। গ্রাম বাংলার মানুষের ঐতিহ্যের সাথে মিশে আছে পান। বিষে সাদিতে পান না হলে চলেই না। কাউনিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, কাউনিয়ায় নতুন করে ৪০ শতকের মধ্যে ২টি পানের বরজ হয়েছে, এখনও উৎপাদনে যায়নি, আশা করছি তারা উৎপাদনে গেলে এখনকার পানের চাহিদা মিটবে। নতুন ভাবে অর্থনৈতিক বাজার তৈরী হবে।