বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকার কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, তা জানানোর আদেশসহ তিনটি নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৯ মার্চের (সোমবার) মধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে অগ্রগতি জানতে বলেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) করোনা ভাইরাস নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনার পর বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
পরে এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশ করোনা ভাইরাসের ঝুঁকিতে রয়েছে, এ মর্মে প্রকাশিত সংবাদ সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী আদালতের নজরে আনলে উচ্চ আদালত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরকে তিনটি মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছেন।`
নির্দেশনা তিনটি হলো-
১. স্থলবন্দর, নৌবন্দর, বিমানবন্দর, বিশেষ করে বিমানবন্দরে যখন বিদেশিরা বাংলাদেশে আগমন করছেন, তখন অভ্যন্তরে প্রবেশের আগে তাদের কী ধরনের পরীক্ষা করা হচ্ছে, যারা পরীক্ষা করছেন তারা প্রশিক্ষিত কি না এবং যেসব যন্ত্রপাতি দিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে সেগুলোর সক্ষমতা রয়েছে কি না তা জানাতে বলেছেন।
২. সারা দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনা ভাইরাসের জন্য পৃথক কেবিনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় এখন পর্যন্ত প্রাক-প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নাই। আদালত নির্দেশনা দিয়েছেন, সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি সব বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও করোনা ভাইরাসের জন্য প্রাক-প্রস্তুতিমূলক সব ধরনের ব্যবস্থা (পৃথক কেবিনসহ চিকিৎসকের সরঞ্জাম) গ্রহণ করতে হবে।
৩. প্রত্যেকটি হাসপাতালে বা বন্দরে যেখানে শনাক্তের জন্য করোনা ভাইরাস পরীক্ষার প্রয়োজন হবে সেখানে পর্যাপ্ত সরঞ্জাম রয়েছে কি না, যদি না থাকে জরুরি ভিত্তিতে আমদানি করার জন্য সরকারকে নির্দেশনা দিয়েছেন। ৯ মার্চের মধ্যে এ বিষয়ে আদালতকে জানাতে হবে।
এ নিয়ে কেউ যেন ভীতি সঞ্চার না করে সে বিষয়ে সচেতনতার জন্য আদালত জোর তাগিদ দিয়েছেন বলেও জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল।
চীনের উহান থেকে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে গেছে বিশ্বের ৮৪ দেশ ও অঞ্চলে। বিশ্বজুড়ে এ ভাইরাস প্রাণ কেড়েছে ৩ হাজার ২৮৫ জনের। এর মধ্যে চীনে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ১২ জনের। চীনের যে শহর থেকে এ ভাইরাস ছড়িয়েছে সেখানে এ ভাইরাসে প্রাণ গেছে ২ হাজার ৩০৫ জনের।