নরসিংদীর বহিষ্কৃত জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামিমা নূর পাপিয়াকে তিন মামলায় ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (১১ মার্চ) পাপিয়া ও তার স্বামীকে আদালতে হাজির করে বিমানবন্দর থানার একটি ও শেরে বাংলানগর থানার দুটি মামলায় ফের এক মাসের রিমান্ড চাওয়া হয়। শুনানি শেষে ঢাকার দুজন পৃথক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি যুবলীগ নেত্রী শামিমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামীসহ চারজনের প্রত্যেককে তিন মামলায় ১৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে তাকে হাজির করে বিমানবন্দর থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ জাল টাকা উদ্ধারের মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কায়কোবাদ কাজী। রিমান্ড আবেদনের প্রতিবেদনে পাপিয়াসহ চার আসামি সংঘবদ্ধভাবে অবৈধ অস্ত্র-মাদক ব্যবসা, চোরাচালান, জাল নোটের ব্যবসা, চাঁদাবাজি, তদবির বাণিজ্য, জমি দখল-বেদখল, অনৈতিক ব্যবসার মাধ্যমে বিপুল অর্থ-বিত্ত অর্জনের কথা উল্লেখ করে মালিক হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মাসুদুর রহমান পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এছাড়া মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে এবং আসামিদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত বৈদেশিক মুদ্রার উৎস এবং জাল টাকা তৈরি চক্রের সক্রিয় সদস্যদেরসহ মূলহোতাকে গ্রেপ্তার, আসামিদের নিয়ে পুলিশ অভিযান পরিচালনা এবং ঘটনার বিষয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। এর আগে ১০ দিনের রিমান্ড দেয় আদালত।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দেশত্যাগের সময় শামিমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউসহ (২৮) চারজনকে আটক করে র্যাব-১। তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, নগদ দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ ইউএস ডলারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়। এ দিন র্যাব জানায়, রাজধানীর গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে প্রেসিডেন্ট স্যুট নিজের নামে সব সময় বুকড করে নানা ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছিলেন পাপিয়া। যিনি হোটেলটির বারে বিলবাবদ প্রতিদিন পরিশোধ করতেন প্রায় আড়াই লাখ টাকা। বৈধ আয় অনুযায়ী পাপিয়ার বাৎসরিক আয় মাত্র ১৯ লাখ টাকা। অথচ হোটেল ওয়েস্টিনে শুধু গত তিন মাসেই বিল পরিশোধ করেছেন প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। যিনি নারী সংক্রান্ত অপকর্ম ছাড়াও অস্ত্র-মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন তদবির বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। শনিবার গ্রেপ্তারের পর ওইদিন রাতেই নরসিংদীর বাসায় এবং রবিবার ভোরে হোটেল ওয়েস্টিনে তাদের নামে বুকিং করা বিলাসবহুল প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটে অভিযান চালানো হয়। এছাড়া ফার্মগেট এলাকার ২৮ নম্বর ইন্দিরা রোডে অবস্থিত রওশনস ডমিনো রিলিভো নামক বিলাসবহুল ভবনে তাদের দুটি ফ্ল্যাটে অভিযান পরিচালনা করে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি পিস্তলের ম্যাগজিন, ২০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ ও নগদ ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেক, বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি ভিসা ও এটিএম কার্ড জব্দ করে র্যাব।