জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের হওয়া দুর্নীতির মামলায় রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাকে নিম্ন আদালতের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (৮ জুন) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদরের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী শামসুন নাহার কনা।
আদেশের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
এর আগে গত ১৭ মে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত নং ৬ ভার্চুয়াল কোর্ট তাকে জামিন দেন। এরপর জামিন বাতিল চেয়ে দুদক ফৌজদারি রিভিশন আবেদন করেন হাইকোর্টে। আজ ভার্চুয়াল আদালত নিয়মিত বেঞ্চ চালু হওয়ার পর এক সপ্তাহ পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।
সাভারে ধসে পড়া রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর সাভার মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক মুহ. মাহবুবুল আলম।
এ মামলায় দুই কোটি ৫৪ লাখ ৪৩ হাজার ৭৯৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। ২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে অসাধু উপায়ে অর্জিত জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করা ও ভোগদখল করার অপরাধে এ মামলাটি দায়ের করা হয়।
এজাহার মতে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে সোহেল রানার আয়কর রিটার্ন দাখিলে তার ব্যাংকে এক লাখ ৭৮ হাজার ৯৫৩ টাকা প্রদর্শন করা হয়। কিন্তু দুদক অনুসন্ধানে গিয়ে দেখে তিনটি ব্যাংক হিসাবে তার নামে ২৭ লাখ ৮০ হাজার ৭৬৭ টাকা জমা আছে। এখানে তিনি ২৬ লাখ এক হাজার ৮১৪ টাকা আয়কর নথিতে প্রদর্শন করেননি।
এ ছাড়া সাভার বাজার রোড এলাকায় রানা টাওয়ারের চতুর্থ তলা পর্যন্ত নির্মাণ ব্যয় এক কোটি ৩০ লাখ ৮৬ হাজার ৫৯৪ টাকা দেখানো হলেও প্রকৃতপক্ষে তিন কোটি ৫৯ লাখ ২৮ হাজার ৫৯৪ টাকা ব্যয় হয় বলে দুদক অনুসন্ধানে জানতে পারে। এখানেও তিনি দুই কোটি ২৮ লাখ ৪১ হাজার ৯৭৯ টাকা কম দেখান।
২০১৫ সালের ১ এপ্রিল রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার সম্পদের হিসাব চেয়ে কারাগারে নোটিশ পাঠায় দুদক। তখন কারাগার থেকে সম্পদের কোনও হিসাব দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন সোহেল রানা। এরপরই আয়কর বিভাগ থেকে তার সম্পদ ও আয়ের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।