কুড়িগ্রামে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়ার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে হাই কোর্ট। এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ করে হাই কোর্ট বলেছে, একজন সাংবাদিককে ধরতে মধ্যরাতে তার বাসায় ৪০ জনের বিশাল বাহিনী গেল, এ তো বিশাল ব্যাপার। বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের অবকাশকালীন হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল এমন বিস্ময় প্রকাশ করে। পরে রিটের বিষয়ে আদেশের জন্য আজ সোমবার দিন ঠিক করেছে আদালত।দন্ডপ্রাপ্ত সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি। তাকে সাজা দেওয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গতকাল রিট আবেদনটি দায়ের করেন নিউজ পোর্টালটির নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদ। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান ও ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে আজকের মধ্যে মোবাইল কোর্টের রায়ের কপি, সাজা মোবাইল কোর্ট না টাস্কফোর্স দিয়েছে- সেই তথ্য, মধ্যরাতে এভাবে কারও বাসায় যাওয়ার এখতিয়ার আছে কি-না প্রভৃতি তথ্য দাখিল করতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট বা টাস্কফোর্সকে কে অভিযোগ দিয়েছে, সেটির কোনো লিখিত আছে কি না তাও জানাতে বলেছে আদালত। এই রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ১৭ জনকে বিবাদী করা হয়। এ ছাড়া ওই সাংবাদিককে সাজা দেওয়ার ঘটনায় কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনকে হাই কোর্টে তলবের নির্দেশনা চাওয়া হয় রিটে।
রিটে ফৌজদারি কার্যবিধি, ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এবং সংবিধানের ৩১, ৩২, ৩৫ এবং ৩৬ অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘনের বিষয় তুলে ধরা হয়েছে রিট আবেদনে। গত শুক্রবার মধ্যরাতে বাসায় হানা দিয়ে মারধর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় আরিফুল ইসলামকে। তার বাসা থেকে আধা বোতল মদ ও দেড়শ গ্রাম গাঁজা জব্দ করা হয়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই সাংবাদিককে এক বছরের কারাদন্ড দিয়ে কারাগারে পাঠায়। এরপর এই ঘটনা নিয়ে সারা দেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে। প্রতিবাদ জানিয়েছে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন।