বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে মহাবিপন্ন প্রজাতির কচ্ছপ বাটাগুর বাসকার ৩৭টি বাচ্চা ফুটেছে। শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) দুইটি বাটাগুর বাসকার ডিম ফুটে ৩৭টি বাচ্চা বের হয়।করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, প্রতিবছর একটা বা দুইটা কচ্ছপে ডিম পাড়লেও ২০২১ সালে চারটি কচ্ছপ ২৮ ফেব্রুয়ারি, ৩ মার্চ, ৫ মার্চ ও ২০ মার্চ যথাক্রমে ২৭, ২৩, ২৩, ২৩টি ডিম পেড়েছিল।
তিনি বলেন, ডিমগুলো থেকে বাচ্চা পাওয়ার কথা ৬৫ থেকে ৬৭ দিন পরে। কিন্তু চলতি বছরে অত্যাধিক দাবদাহের ফলে যথাক্রমে ৬২ ও ৫৯ দিনে ডিম থেকে বাচ্চা পাওয়া গেছে। বাকি ২টি কচ্ছপের বাচ্চাও দ্রুত পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।
বাটাগুর বাসকা সম্পর্কে বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা বলেন, বাটাগুর বাসকা বিলুপ্ত প্রজাতির কচ্ছপ। ২০০০ সালের দিকেও বন্যপ্রাণী গবেষকরা মনে করতেন কচ্ছপের এই প্রজাতি পৃথিবী থেকে চিরতরে হারিয়ে গেছে। কিন্তু ২০০৮ সালে বাংলাদেশে বরিশাল-নোয়াখালী অঞ্চলের নদীতে ৮টি বাটাগুর বাসকা পাওয়া যায়। তারপর থেকেই প্রাণীটির বিলুপ্তি ঠেকাতে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান এবং সুন্দরবনের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে ক্যাপটিভ ব্রিডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বন বিভাগ।
তিনি বলেন, এই কচ্ছপ মাংসাশী। এটি ছোট উদ্ভিদ, শামুক, ক্রাস্টেশিয়ান, ছোট মাছ ও কেওড়া গাছের ফল খেয়ে থাকে। পৃথিবীতে প্রায় ৩০০ প্রজাতির কচ্ছপ পাওয়া যায়। তাদের আয়ু গড় ২০০ থেকে ৩০০ বছর। কিন্তু বাটাগুর বাসকার গড় আয়ু মাত্র ৪০ বছরের মতো। এ কারণেই এরা আরও বেশি হুমকির সম্মুখীন।
জোহরা মিলা জানান, প্রতিটি বাটাগুরের ওজন ১৮ থেকে ২০ কেজি হয়ে থাকে। পৃথিবীতে শুধু বাংলাদেশেই ২০০টির মতো বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ রয়েছে।