ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে হিন্দুসম্প্রদায়ের বাপদাদার আদি শ্মশানঘাট দখলের চেষ্টা
19, October, 2022, 9:00:32:PM
স্টাফ রিপোর্টার।।ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে ৬নং ইউনিয়নের গড়গাও গ্রামের একটি সরকারী পুকুর পাড়ে শ্মশান দখলের চেষ্টা একটি মহলের। জানা যায়,উক্ত পুকুরপাড়ে শ্মশান কালি পূজা করা নিয়ে এলাকার হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।বুধবার সকালে মুসলমান সম্প্রদায়ের স্থানীয় কিছু লোক ঐ পুকুর পাড়ের আংশিক জমি বাঁশ দিয়ে ঘিড়ে নিয়ে দখলের চেষ্টা করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উপজেলা চেয়ারম্যান সহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে সাময়িক ভাবে পরিস্থিতি শান্ত করলেও উভয় সম্প্রদায়ের লোক জনের মধ্যে চাপা উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে।এ নিয়ে যে কোন সময় বড় ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশংকা প্রকাশ করেছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। স্থানীয় ঐ এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন জানান,পীরগঞ্জ উপজেলার গড়গাও,দুর্গাপুর, নারায়নপুর ও ক্ষিদ্রগড়গাও গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন যুগযুগ ধরে ধরে বড় গড়গাঁও গ্রামের ঠাকুর হাল পুকুর পাড়ের উত্তর-পশ্চিম কোনের অংশ শ্মশান ঘাট হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন।বাকি অংশ স্থানীয় মুসলমান সম্প্রদায়ের কিছু লোক নিজেদের দাবী করেন।বিগত মার্চ মাসে মুসলমান সম্প্রদায়ের স্থানীয় কিছু লোক ঐ শ্মশানের পূর্বে পুকুরপাড়ে হঠাৎ করেই একটি মসজিদ স্থাপনের উদ্যোগ নেয় এবং রাতারাতি মসজিদের ভিত্তি নির্মান কাজ সম্পন্ন করেন।এ নিয়ে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনের মাঝে কন্দোল দেখা দেয়।এ সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ঐ নির্মান কাজ বন্ধ করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন করেন।আবেদনের প্রেক্ষিতে তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজাউল করিম তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নির্মান কাজ বন্ধ করে দিয়ে তা ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দেন।পরে নির্মানাধীন ঐ সমজিদ ঘড়ের ভিত্তি ভেঙ্গে ফেলা হয়।সেখানেই থেমে যায় ঊভয় সম্প্রদায়ের কন্দোল। তবে এরই মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শ্মশানের জমি মেপে সীমানা নির্ধারণ করে দেয়া হয়।হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন শ্মশানের জমিতে প্রাচীর করার জন্য সীমানা পিলার স্থাপনও করেন। সম্প্রতি সেখানে শ্মশান কালি পুজা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।তাতে এবার মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজনের মাঝে।এ নিয়ে উভয় সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে চাপা উত্তেজনা চলছিল।গত মঙ্গলবার শ্মশান কমিটি সেখানে কালি পুজা করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন করেন।বিষয়টি জানতে পেরে বুধবার সকালে ঐ পুকুরের উত্তর-পূর্ব অংশ এবং আংশিক পশ্চিম ও দক্ষিন অংশ বাঁশ দিয়ে ঘিড়ে নিজেদের দখলে রাখার চেষ্টা করেন মুসলমান সম্প্রদায়ের স্থানীয় কিছু লোক।বিষয়টি জানাজানি হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়।খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আখতারুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী আফিসার শাহরিয়ার নজির, থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম,স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন ও মকলেসুর রহমান চৌধুরী সহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।তারা উভয় সম্প্রদায়ের লোকজনকে বুঝিয়ে শান্ত করেন এবং বাঁশের বেড়া খুলে ফেলেন।যে যে অবস্থানে আছে,সে অবস্থানে থাকার নির্দেশনা দেন প্রশাসন।এতে উত্তেজনা সাময়িক নিরশন হয়। শ্মশান কমিটির সভাপতি অমল চন্দ্র রায় জানান, তাদের বাপ দাদার আমলের শ্মশান দখল করার জন্য একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে এবং আগামী ২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া শ্মশান কালি পুজায় নানা ভাবে বাধার সৃষ্টি করে আসছেন এবং ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। এতে তারা চরম শংকিত ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এদিকে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক জন তারা বাপদাদার আদি শ্মশানে শ্মশান কালী পুজা করতে গিয়ে যেন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এজন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানান সাংবাদিক কে।থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম জানান,সেখানে যেন কোন সমস্যা না হয় সেজন্য উভয়পক্ষকে শান্ত থাকতে বলা হয়েছে এবং পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ নজর রয়েছে।