বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতক্ষীরা জেলা কমিটি থেকে ৯ জনের পদত্যাগ
4, January, 2025, 8:46:57:PM
মোঃ আজগার আলী, জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা: ছাত্র-জনতার জুলাই বিপ্লবের প্রথম সারিতে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের বাদ দিয়ে আন্দোলনে যাদের কোনো ভুমিকা ছিলনা তাদের নিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতক্ষীরা জেলা কমিটি গঠন করার অভিযোগ উঠছে। এ কমিটি বাতিলের দাবিতে শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় খুলনা রোডস্থ মোড় শহীদ আসিফ চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ এ অভিযোগ করেন। এসময় নতুন কমিটি থেকে ৯ জন শিক্ষার্থী পদত্যাগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক বখতিয়ার হোসেন। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, সাতক্ষীরা জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, প্রথম থেকেই দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট হাসিনার বোমা-বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিতে দ্বিধাবোধ করেনি। বর্তমানে সাতক্ষীরা জেলায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দলনের যে কমিটি দেওয়া হয়েছে সেটি একটি বিত্তিহীন বিল্ডিং মাত্র। স্বজন প্রীতির মাধ্যমে প্রকৃত ত্যাগীদের অবমূল্যায়ন করে পকেট কমিটি করা হয়েছে। যারা সামনের সারিতে থেকে এই আন্দলনে নেতৃত্ব দিয়েছিল তাদের অধিকাংশকে বাদ দিয়ে এই কমিটি দেওয়া হয়েছে। তাই আমরা এই পকেট কমিটিকে প্রতাখ্যাান করছি। এসময় তিনি আরও বলেন, এই সংবাদ সম্মেলনের মধ্যদিয়ে নতুন এই কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন অন্যতম যুগ্ম-আহবায়ক মোঃ ইখতিয়ার উদ্দিন, সায়েম রহমান সিয়াম, সদস্য এ.এইচ রিফাত, মুশফিকুর রহমান, মেহেদী হাসানসহ ৯ জন। পরবর্তীতে অন্যরাও পদত্যাগ করবেন বলে জানানো হয়। তিনি এসময় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেন, সাতক্ষীরা জেলার এই কমিটি বাতিল করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা প্রথম সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের সবাইকে নিয়ে একটি নিরপেক্ষ কমিটির করার জোর দাবী জানান। সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতক্ষীরার প্রধান সমন্বয়ক মোঃ ইমরান হোসেন বলেন, সাতক্ষীরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে সেই কমিটিতে স্বজনপ্রীতি, আর্থিক লেনদেন এবং যোগ্য ব্যক্তিদেরকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। আমরা এই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করছি। দলছুট, অনুপ্রবেশকারী, বহিরাগত ও আন্দোলনে যাদের কোনো ভুমিকা ছিলনা তাদের নিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতি সম্মান রেখে আমরা তাদেরকে হুঁশিয়ার করে বলে দিতে চাই, আপনারা ঢাকায় বসে কমিটি করেছেন, আপনাদের উচিত ছিল সাতক্ষীরায় যারা নেতৃত্ব পর্যায়ে ছিল তারাসহ সবার সাথে কথা বলে সবার সাথে সমন্বয় করে একটি বৈষম্যহীন কমিটি করা। আমরা চাইবো নতুন করে সবার সাথে আলোচনা করে সংযোজন বিয়োজন করে এই কমিটির সংস্কার করা হোক। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক মুশফিকুর রহমান বলেন, সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতক্ষীরার যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে এই কমিটিতে ত্যাগী এবং যোগ্য অনেককে রাখা হয়নি বরং বৈষম্যবিরোধী কমিটিতে বৈষম্য করা হয়েছে। সাতক্ষীরায় যারা এই আন্দোলনের সূত্রপাত করেছিলো তাদেরকে বাদ রেখে এই কমিটি দেওয়া হয়েছে। তাই এই কমিটি বাতিল করে সাতক্ষীরার আন্দোলনের সকল স্টেকহোল্ডারদের সাথে কথা বলে পুনরায় যাচাই-বাছাই করে নতুন করে কমিটি ঘোষণা করুন। এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এএইচ রিফাত, সায়েম রহমান সিয়াম, মাসকুরা পারভীন মৌস প্রমুখ। এসময় সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন, ইখতিয়ার উদ্দিন, মোল্লা মোহাম্মদ সাহাজুদ্দিন, মোঃ তানজিদুর রহমান, সাকিব হাসান, রাকিব হাসান, মোমিনুর রহমান, তুহিন হোসেন রিয়াদ, মিজান রহমান, আনারুল ইসলাম সান, সামিউজ্জামান শ্রাবণ, মোস্তাফিজুর রহমান, আব্দুল্লাহ আল মামুন অরকো, ইব্রাহিম খলিল, মেহেদী হাসান, তারিক ইসলামসহ অন্যান্যরা। উল্লেখ্য: গত ২ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সদস্যসচিব আরিফ সোহেল স্বাক্ষরিত পত্রে সাতক্ষীরার জেলার একটি কমিটি দেওয়া হয়। কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন আরাফাত হোসাইন ও সদস্যসচিব হিসেবে হয়েছেন সুহাইল মাহদীন। মুখ্য সংগঠক আল শাহরিয়ার এবং মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে মোহেনী পারভীনকে। কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন, মুজাহিদুল ইসলাম, মোঃ মিজানুর রহমান, মাসুম বিল্লাহ, সোহেলী তামান্না, মইনুল ইসলাম দীপু, আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ আরও আটজন। যুগ্ম সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মোঃ নাজমুল হোসেন, মোঃ রেজওয়ান আহমেদ, ওমর তাসনিম রাহাতসহ আরও সাতজন। সংগঠক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন মোঃ হাসিবুল হাসান, আমিনুর রহমান রাতুল, শেখ ওমর ফারুকসহ মোট সাতজন। এছাড়াও ১২২ জন সদস্য হিসেবে কমিটিতে স্থান পেয়েছেন।