দীর্ঘ ৭১ বছরের ব্যবসার ইতিহাসে নেননি কোনও ব্যাংক ঋণ। নিয়ম মেনে ৬৩ বছর ধরে দিচ্ছেন কর। স্বীকৃতি হিসেবে ১৪ বার পেয়েছেন বিভিন্ন রাজস্ব পুরস্কার। তিনি হাকিমপুরি জদ্দার স্বত্বাধিকারী কাউছ মিয়া। মুজিববর্ষ উপলক্ষে একমাত্র সেরা করদাতা হিসেবে প্রবীণ এই ব্যবসায়ীকে বিশেষ সম্মাননা দিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৫০ সালে বিস্কুট, সাবান ও সিগারেটের এজেন্ট হওয়ার মধ্য দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন কাউছ মিয়া। আট বছরের মাথায় প্রথম কর দেন তিনি। সেই থেকে টানা ৬৩ বছর ধরে কর দিচ্ছেন হাকিমপুরি জদ্দার এই স্বত্বাধিকারী। ১৯৬৭ সালেও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে এক নম্বর করদাতা নির্বাচিত হন কাউছ মিয়া। এ পর্যন্ত ১৪ বার পেয়েছেন বিভিন্ন রাজস্ব পুরস্কারও।
তাই দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীকে বাদ দিয়ে মুজিববর্ষের একমাত্র সেরা করদাতা হিসেবে কাউছ মিয়াকে বেছে নেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর। শুক্রবার (৫ মার্চ) এনবিআরের সম্মেলনকক্ষে প্রবীণ এই ব্যবসায়ীকে দেয়া হলো বিশেষ সম্মাননা।
এ সময় কাউছ মিয়া বলেন, ‘আজ আমি আনন্দিত, গর্বিত এই সম্মাননা দেয়ার জন্য। সাতজন জমিদারের নাতি আমি। ঢাকা শহরে আমার অনেক জমিজমা আছে। বর্তমানে ১০-১২ ধরনের ব্যবসাও রয়েছে। ব্যবসার সব তথ্য আমার আয়কর ফাইলে রয়েছে। ৭১ বছরের ব্যবসা জীবনে আমি কোনোদিন ব্যাংকের ঋণ নেইনি। আমার পূর্বপুরুষও নেয়নি। পরিশ্রম করে সব সম্পদ অর্জন করেছি। ৯১ বছর বয়সেও আমি প্রতিদিন রাত ২টা পর্যন্ত ব্যবসায়িক কাজ করি। এ সময় সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে কাউছ মিয়া বলেন, আমার সব সম্পদ আল্লাহ দিয়েছে। উপস্থিত সবার উদ্দেশে কাউছ মিয়া বলেন, আমার কী পরিমাণ সম্পদ আছে, আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না।
অনুষ্ঠানে কাউছ মিয়ার মতো দেশের উন্নয়নে সবাইকে কর দেয়ার আহ্বান জানান রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মোহাম্মদ রহমাতুল মুনিম বলেন, প্রশ্ন এসেছিল এবার কতজনকে সেরা করদাতা ঘোষণা করা হবে। তবে মুজিববর্ষ উপলক্ষে আমরা একজনকেই সেরা করদাতা হিসেবে সম্মাননা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেই এবং আমরা কাউছ মিয়াকে বেছে নিয়েছি। কারণ তিনি অন্য ব্যবসায়ীদের চেয়ে আলাদা। তার তুলনা চলে না।
এর আগে লটারির মাধ্যমে ইএফডি মেশিনে ভ্যাট প্রদানকারী ১০১ জন গ্রাহক পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ইএফডি মেশিনে ভ্যাট আদায়কারী হিসেবে একটি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয় সম্মাননাও।