রাজধানীর কলাবাগানে গলা কেটে মাকে হত্যার চেষ্টাকারী ছেলে খান মিল্লাত হোসেনকে (২৫) অবশেষে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল রোববার গভীর রাতে পান্থপথে চেকপোস্টে তল্লাশির সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-২ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর এইচ এম পারভেজ আরেফিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ছেলের বিরুদ্ধে করা মায়ের হত্যাচেষ্টা মামলায় অভিযুক্ত মিল্লাতকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
ওই মায়ের নাম নুরুন্নাহার রুনু। তার অভিযোগ, নেশার টাকার জন্য প্রতিনিয়ত তিনি মারধরের শিকার হন একমাত্র ছেলে মিল্লাত হোসেনের। শুধু মারধরই না, একাধিকবার ওড়না দিয়ে তাকে ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস দিয়ে হত্যার চেষ্টাও করে সে।
অসহায় এই মা জানান, গত ১০ মে মাদকের টাকার জন্য তার ওপর চড়াও হয় মিল্লাত। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ঘরে থাকা লাঠি দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি পেটায় সে। টিভি, ফ্রিজ, সোকেসসহ ঘরে থাকা প্রায় সবকিছু ভেঙে ফেলে। শুধু তাই নয়, মাথায় আঘাত পেয়ে নুরুন্নাহার মেঝেতে পড়ে গেলে গরু কাটার বড় ছুরি দিয়ে তার গলা কাটার চেষ্টা করে মিল্লাত।
পরে চিৎকার দিয়ে কোনো রকমে উঠে পালাতে গেলে নুরুন্নাহারকে একপর্যায়ে একটি ওড়না দিয়ে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে হত্যাচেষ্টা করে ছেলে। এক পর্যায়ে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে মায়ের গলার স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় মিল্লাত।
সেদিনই রাজধানীর কলাবাগান থানায় ছেলের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা করেন অসহায় মা। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
প্রসঙ্গত, কলাবাগানের গেজেটেড অফিসার্স ডরমেটরি গ্রিনরোডের একটি ফ্ল্যাটে প্রায় সাত বছর ধরে মিল্লাতকে সঙ্গে নিয়েই থাকতেন নুরুন্নাহার রুনু। তিনি জানান, মিল্লাত ছেলেবেলা থেকেই ঊচ্ছৃঙ্খল আচরণ করতো। তিন বছর আগে স্বামী খান সাহাদাৎ হোসেন মারা যাওয়ার পর ছেলে আরও বিগড়ে যায়। পরে খারাপ ছেলেদের সঙ্গে মিশে মাদকে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। বহু চেষ্টার পর ব্যর্থ হয়ে তাকে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রেও ভর্তি করা হয়, কিন্তু শোধরায়নি সে।