আল জাজিরায় প্রকাশিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার’ ম্যান প্রতিবেদনটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিষয়ে মানহানিকর তথ্য প্রচার করা হয়েছে। এমন পর্যবেক্ষণ দিয়ে হাইকোর্ট বিতর্কিত প্রতিবেদনটি প্রকাশের ১০ দিন পর আদালতে আসার জন্য রিটকারী আইনজীবীকে ভৎসনা করেছেন।হাইকোর্ট রিটকারী আইনজীবীকে উদ্দেশ করে বলেন, আল জাজিরার প্রতিবেদনটি ১ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হয়, যা গেল ৯ দিনে দেশ-বিদেশের লাখো মানুষ দেখেছে। আর আপনি ১০ দিন পর আদালতের কাছে এসেছেন ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটারসহ সব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে এটি সরিয়ে নেওয়ার আদেশ নিতে। এত দিন কী করেছেন?
শুধু তাই নয়, আল জাজিরার প্রতিবেদনের বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসি কেন কিছু করেনি সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেন হাইকোর্ট। বিটিআরসির পক্ষে থাকা আইনজীবী রেজা ই রাকিবকে হাইকোর্ট প্রশ্ন করেন, আপনাদের তো এ ধরনের কন্টেন্টের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুর্নিদিষ্ট আইন আছে। তাহলে আপনারা বা তথ্য মন্ত্রণালয় কেন কিছু করেনি।অতীতের বিভিন্ন সময় তো এ ধরনের ইস্যুতে আপনারা ব্যবস্থা নিয়েছিলেন, তাহলে আল জাজিরা ইস্যুতে কেন আপনারা নিজেরা কিছু না করে আদালতের কাছে এসেছেন?
বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকালে বিচারপতি মো. মজিবর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা বাংলাদেশে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ ও অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার ম্যান প্রতিবেদনটি ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটারসহ সব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে করা রিটের শুনানিতে এসব মন্তব্য করেন।
দ্বিতীয় দিনের মতো আল জাজিরা ইস্যুতে হাইকোর্ট শুনানি শুরু করেন সকাল ১১টা ৪৮ মিনিটে। শুনানিতে বিটিআরসির আইনজীবী ব্যারিস্টার রেজাই রাকিব আদালতকে বলেন, আল জাজিরায় প্রকাশিত অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার ম্যান প্রতিবেদনটি দেশের সার্বভেৌমত্বের ওপর আঘাত। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। দেশের সেনাবাহিনী, পুলিশসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মানহানির উদ্দেশ্যই কাতারভিত্তিক বেসরকারি চ্যানেল আল জাজিরা রিপোর্টটি প্রকাশ করেছে।
অন্যদিকে রিটকারী আইনজীবী আনামুল কবীর ইমন শুনানিতে আদালতে বলেন, আল জাজিরার প্রতিবেদনের শিরোনাম থেকেই স্পষ্ট হয় এটি একটি বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে। এ প্রতিবেদন সরকারবিরোধী এবং দেশের বিদ্যমান স্থিতিশীলতা নষ্টের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
আদালত এ বিষয়ে অধিকতর শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের ৬ জন আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দেন। তারা হলেন- সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, কামাল উল আলম, আব্দুল মতিন খসরু, ফিদা এম কামাল, প্রবীর নিয়োগী ও ড. শাহদীন মালিক।
আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ ও বিতর্কিত অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার ম্যান প্রতিবেদনটি ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটারসহ সব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।