ঠাকুরগাঁওয়ে ভূল চিকিংসা আর চিকিৎসকের অবহেলায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিহত মেহবাহুল হক লালন (১৯) সদর উপজেলার রায়পুর গ্রামের জলাই মন্ডলের ছেলে। তিনি রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
নিহত লালনের বড় ভাই বিপ্লব বলেন, দেড় মাস আগে ফুটবল খেলার সময় ডান হাতের হাড় ভেঙে যায় লালনের। স্থানীয় কবিরাজের কাছে চিকিৎসা করে সুস্থ হলেও মাঝে মাঝে হালকা ব্যাথা অনুভব করতো লালনের হাতে ।
বুধবার (৩ মার্চ) সকালে ডা. জিল্লুর রহমান সিদ্দীর কে দেখালে তিনি বলেন, জরুরি ভাবে হাতে অপারেশন করতে হবে। তিনি ভর্তি হতে বলেন শহরের ডেল্টা হাসপাতাল ক্লিনিকে। ডাক্তারের কথা মতে বিকেলেই লালন ভর্তি হয় সেখানে। ভূল চিকিৎসায় রাতে মারা যান লালন।
লালনের দুলাভাই মজিবর রহমান বলেন,
বুধবার রাত ১০টার পরে লালনকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়ার আগে অনেক কথা হয়েছে।
লালন বলেছিল, তার অন্য কোনো সমস্যা নেই। হাতের অপারেশন ভয়ের কিছু নেই। অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার পরে সে সবার সাথে কথা বলছিল। লালনকে অপারেশন থিয়েটারের বাহির থেকেই দেখা যাচ্ছিল।
তাকে কয়েকটা ইঞ্জেকশন পুশ দেওয়া হলে সে ধীরেধীরে জ্ঞান হারায় । পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলে লালনের হালকা সমস্যা দিনাজপুর মেডিকেলে নিতে হবে। অ্যাম্বুলেন্সে দ্রুত তুলে নিয়ে সরে যায় তারা। হালকা শ্বাসপ্রশ্বাস চললেও পথে তার মৃত্যু হয় লালনের।
লালনের বাবা জলই মন্ডল বলেন,
ডাক্তার বলেছিল হালকা অপারেশন সে জন্য ছেলেকে নিয়ে গেছিলাম। আগে জানলে কসাই খানায় নিয়ে যেতাম না ছেলেকে নিয়ে । সুস্থ ছেলেকে হাতের ছোট একটা অপারেশনে হারাতে হবে ভাবতে পারিনি। ইচ্ছে করছে মামলা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে উচিত শিক্ষা দেই। আমার মত আর যেন কোন বাবার কোল খালি না করে তারা। কিন্তু মামলা করলে সোনার ছেলেকে কাটা ছেড়া করবে সে কারণে মামলা করছি না। অনেক স্বপ্ন নিয়ে ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করেছিলাম স্বপ্ন আমার শেষ হয়ে গেল।
তবে এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ডা. জিল্লুর রহমান সিদ্দীর কোন কথা বলতে রাজি হননি।
ঠাকুরগাঁও সদর থানা পরিদর্শক (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে শুনেছি। কেউ এখনো কোন অাভিযোগ করপনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।