অতীতের ভুল থেকে বিএনপিকে শিক্ষা নিতে হবে মন্তব্য করেছেন দলের সিনিয়র নেতারা। `ইতিহাস কথা কয়`- শিরোনামে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিএনপি নেতারা এমন মন্তব্য করেন।
বুধবার (১৮ আগস্ট) এই ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় অনেক ভুল করেছে। তার আত্মসমালোচনা করতে হবে। জিয়ার আদর্শচ্যুত হওয়ায় বিএনপি ক্ষমতা হারিয়েছে। বিএনপি যাতে বন্ধুহীন না হয়ে পড়ে সে বিষয়ে বিএনপিকে সতর্ক থাকতে হবে।
এসময় হাফিজ বলেন, ক্ষমতায় যেতে বিএনপি যেন কারো দয়া ভিক্ষা নিতে না যায়, জনগণের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসতে যতদিন সময় লাগবে ততদিনই অপেক্ষা করতে হবে।
‘শত চেষ্টা করেও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতি প্রমাণ করতে না পেরে মুজিব হত্যার সাথে জিয়াকে জড়ানোর চেষ্টা করছে। হিংসা থেকেই আওয়ামী লীগ জিয়ার মর্যাদা ক্ষুণ্ন করছে,’ বলেন মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, আফগানিস্তান থেকে শিক্ষা নেন। আমরা আশান্বিত হয়েছি। যত বড় পরাশক্তির সমর্থনই নেন, জনসমর্থন ছাড়া ক্ষমতায় থাকা সম্ভব নয়। ষড়যন্ত্রের দিন শেষ, বিনাভোটে যারা ক্ষমতায় আছে তাদের দিন ঘনীয়ে আসছে।
ভার্চুয়াল আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভার শুরুতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের তাবেদার রাজনীতিক দল ও জনবিচ্ছিন্ন সরকার। ১৫ আগস্টের ভ্রান্ত ইতিহাস তুলে ধরতে চায় সরকার, জিয়া সম্পর্কে মিথ্যা কথা কেউ বিশ্বাস করবে না বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
ইতিহাসের সত্যতা হলো, বাকশাল প্রতিষ্ঠা, ৭৪ এর দুর্ভিক্ষ, বিরোধী রাজনীতিকদের হত্যার ইতিহাসও তুলে ধরতে হবে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে বিতর্কিত করে কোনো লাভ হবে না,’ বলেন মির্জা ফখরুল। এ সরকারকে বিতাড়িত করতে তরুণ যুবকদেরকে সামনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান দলের মহাসচিব।
১৭ আগস্টের চন্দ্রিমা উদ্যানে পুলিশের সাথে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, বিনা উসকানিতে জিয়ার মাজারে বিএনপি নেতাকর্মীদের পুলিশ ১৮৭ রাউন্ড গুলি করেছে। মামলা দিয়ে বিএনপিকে দমন করাই সরকারের উদ্দেশ্য বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। এসময় বিএনপির মহাসচিব এসব মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানান।
ফখরুল বলেন, যখনই জিয়াকে নিয়ে ইতিহাস বিকৃতি চলবে তখনই প্রকৃত ইতিহাস সামনে এনে তার বিরুদ্ধে লড়াই চলবে। সরকারের মন্ত্রীরা জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে, ক্ষমতায় টিকে থাকতে জিয়া পরিবারের ভাবমূর্তিকে টার্গেটে পরিণত করেছে।
লিখিত বক্তব্যে ফখরুল বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে জিয়ার নাম সম্পৃক্ত করা আওয়ামী লীগের দেওলিয়াপনা ও ১৫ আগস্টের রায়কে প্রশ্নবিদ্ধ করার শামিল।
দীর্ঘ সাড়ে তিন ঘণ্টার আলোচনায় বিএনপির সিনিয়র নেতারা ছাড়াও কল্যাণ পার্টি চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীম মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের সাথে যুদ্ধের বিভিন্ন স্মৃতি তুলে ধরেন।