প্রেমিক-প্রেমিকাকে দেখে ফেলায় খুন হয় সেই শিশু লিজা
10, February, 2022, 4:12:41:PM
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি,
হবিগঞ্জে ৯ বছরের শিশু লিজাকে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
প্রেমিক-প্রেমিকাকে একসাথে দেখে ফেলায় ও বিষয়টি প্রেমিকার মাকে জানিয়ে দেয়ায় ৯ বছরের শিশু লিজাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পিবিআই।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে হবিগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. আল মামুন শিকদার। এ ঘটনায় জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তারের পর তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
পুলিশ সুপার জানান, গত বছরের ২১ জুলাই ঈদ-উল আযহার দিন সকালে মাধবপুর উপজেলার আইলাবই গ্রামের সাগর আলীর ৯ বছর বয়সী মেয়ে লিজা আক্তারকে তার মা সেলিনা বেগম নুডুলস কিনতে পাশের গন্ধবপুর বাজারে পাঠান। কিন্তু সে ফিরে না আসায় বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পায়নি পরিবার।
এর চারদিন পর (২৫ জুলাই) পার্শ্ববর্তী বাঁশঝাড়ে লিজার অর্ধগলিত মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। ওইদিন রাতে লিজার বাবা সাগর আলী অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মাধবপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।
তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে গন্ধবপুর গ্রামের বাহার উদ্দিনকে গত ৭ ফেব্রুয়ারি আটক করে পিবিআই। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ৯ ফেব্রুয়ারি খাদিজা আক্তার তাজরীন ও আমেনা খাতুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তারা হবিগঞ্জ সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
আসামিরা আদালতকে জানান, তাজরীনের ছোট ভাই তাকবীর হাসানের সাথে প্রতিবেশী কিশোরী শান্তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সুবাদে তারা দু`জন প্রায়ই দেখাসাক্ষাৎ করতেন।
হত্যাকাণ্ডের কয়েকদিন আগে তাকবির ও শান্তা দেখা করার সময় শিশু লিজা তাদেরকে একসাথে দেখে ফেলে এবং বিষয়টি শান্তার মাকে জানিয়ে দেয়। এরপর শান্তার মা শান্তাকে গালিগালাজ করেন এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেন।
এতে তাদের প্রেম নষ্ট হওয়ার পথে চলে গেলে রাগে ও ক্ষোভে লিজাকে শায়েস্তা করার সুযোগ খুঁজতে থাকেন শান্তা ও তাকবির।
অবশেষে গত বছরের ২১ জুলাই সকালে বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে লিজাকে চকলেটের লোভ দেখিয়ে একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে যান ঘাতকরা। এরপর তারা লিজাকে গলাটিপে হত্যা করে বাঁশঝাড়ে ফেলে রেখে আসেন।
পুলিশ সুপার মো. আল মামুন শিকদার জানান, হত্যাকাণ্ডে বেশ কয়েকজন অংশ নেয়। এর মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।