ফুলবাড়ী উপজেলার চিন্তামন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রটি নির্মাণ হলেও ৩ বছরেও চালু হয়নি।
22, May, 2023, 6:53:30:PM
মোঃ আফজাল হোসেন,
দিনাজপুর প্রতিনিধি
দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার বেতদিঘী ইউপির (চিন্তামন) ১০শয্যা বিশিষ্ট্য মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রটি নির্মাণের ৩ বছর পার হলেও চালু হয়নি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি। ফুলবাড়ী উপজেলার বেতদিঘী ইউপি মা ও স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি নির্মাণে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয় থেকে প্রায় ৪ কোটি ২৫ হাজার টাকা নির্মাণ কাজে বরাদ্ধ দ্ওেয়ার পর স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর দিনাজপুর টেন্ডার আহবান করলে উক্ত টেন্ডারের কাজটি পেয়ে থাকেন সিরাজগঞ্জ জেলার মেসার্স পিয়াস কনসট্রাকশন । নির্মাণ কাজটির ওয়ার্ক ওর্ডার পাওয়ার পর গত ১৬/০৮/২০১৮ইং সালে এ্যাড: মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার (এমপি) চিন্তামন ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রটি নির্মানের ভিত্তি স্থাপন করেন। ভিত্তি স্থাপনের পর থেকে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যান এর কাজ শুরু হয়। ফুলবাড়ী উপজেলার চিন্তামন ১০ শয্যা বিশিষ্ট্য মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রটি নির্মাণ হলেও গত ৩ বছরেও চালু হয়নি। ঠিকাদার মোঃ আনোয়ার হোসেন ১০ শয্যা বিশিষ্ট্য মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র এবং ৩য় তলা আবাসিক ভবন নির্মাণ করার পর ভবন দুটি এখন তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। শিশু কল্যান কেন্দ্রের নির্মাণকৃত ৩য় তলা ভবনে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে সরবরাহকৃত মালামালগুলি তালা বন্ধ অবস্থায় থাকার কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলার মেসার্স পিয়াস কনসট্রাকশনের সত্বাধীকারী মোঃ আনোয়ার হোসেন এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, ভবন নির্মাণ হওয়ার পর দুটি ভবন ও মালামাল ২০২২ ইং সালে দিনাজপুর জেলার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ পরিচালক মোছাঃ মমতাজ বেগম এর নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন এখানে আমার করার কিছু নাই।
অন্যদিকে দিনাজপুর স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুর রউফ এর সাথে কথা বলে তিনি জানান, ভবন নির্মাণ তদারক করেছি আমি। তবে ভবন নির্মাণ হওয়ার পর ভবন দুটি ঠিকাদার মোঃ আনোয়ার হোসেন দিনাজপুর জেলার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ পরিচালক মোছাঃ মমতাজ বেগম এর নিকট হস্তান্তর করেছেন।
এ বিষয়ে দিনাজপুর জেলার তৎকালীন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ পরিচালক মোছাঃ মমতাজ বেগম এর সাথে কথা বলে তিনি জানান, ঠিকাদার ভবন দুটি আমার নিকট হস্তান্তর করেছে। তবে জনবলের কারণে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে জনবল দেওয়া হলে আমরা এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চালু করব।
একই কথা বলেন তৎকালীন ফুলবাড়ী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মেডিকেল অফিসার ডা: মোঃ রইচ উদ্দীন এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, ঠিকাদার ভবন দুটি নিমার্নের পর দিনাজপুর উপ পরিচালক মোছাঃ মমতাজ বেগম এর নিকট হস্তান্তর করেছেন। আমি ঐ উপকেন্দ্রের দায়িত্বভার এর কোন চিঠি পাই নি। এদিকে গতকাল সোমবার দিনাজপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তৎকালীন উপ পরিচালক মোঃ মমতাজ বেগম অবসর গ্রহণ করার পর আমি জেলার দায়িত্ব প্রাপ্ত হই। বর্তমান বেতদিঘী ইউপি মা ও স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি তে সরকারি ভাবে জনবল না থাকায় চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। জনবল দেওয়া হলে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চালু করা হবে। পাহারাদার মিজানুর রহমান ২০২০ ইং সাল থেকে ভবন দুটি তদারক করছেন। গত ৩ বছর ধরে তাকে বেতন দেওয়া হচ্ছে না। ঠিকাদার তার নিকট চাবি দিয়ে চলে গেছে। এখন ঠিকাদার বলছে পাহারাদারের টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। অন্যদিকে পাহারাদার মিজানু রহমান বলছেন ৩ বছর ধরে কোন বেতন পাই নি। ঠিকাদার আমাকে রাস্তায় চাবি ফেলে দিতে বলে। এই অবস্থায় পাহারাদার এখনও ভবনটি দায়িত্ব পালন করছেন। কে দিবে এই পাহারাদারের বেতন? আনাহারে অদ্যহারে দিন যাপন করছে পাহারাদার। গত ৩বছর ধরে স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় কাঙ্খিত সেবা থেকে বি ত হচ্ছে এলাকার মানুষ।