আওরঙ্গজেব কামাল :
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ
পেয়েই ঢাকা ১৯ আসনে নির্বাচনের আমেজ শুরু হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটের
প্রচারে নেমে পড়েছেন প্রার্থীরা। ভোটারদের কাছে ছুটতে শুরু করেছেন
নির্বাচনে অংশ নেয়া বিভিন্ন দলের প্রার্থী ও কর্মী সমর্থকরা। প্রচারে
পিছিয়ে নেই স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরাও। আওয়ামী লীগ ও
স্বতন্ত্র প্রার্থীরা উন্নয়নের বার্তা নিয়ে মানুষের কাছে ভোট চাচ্ছেন।
আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রার্থীদের প্রচারণা শুরু হয়েছে । দলীয়
এবং ব্যক্তিগত প্রতীক পাওয়ার পরই প্রার্থীরা প্রচারণায় নেমে পড়েন। তারা
সাভার আশুলিয়া গড়ার উন্নয়নের বার্তা নিয়ে মাঠে কাজ করছেন। অনেকে
নির্বাচনি পোস্টার আগেই ছেপে রেখেছিলেন, গতকাল নির্বাচনি এলাকার বিভিন্ন
পাড়া-মহল্লায় তা টানানো শুরু হয়েছে। এবার এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত
প্রার্থী ডা: এনামুর রহমান । সফল এ ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা
প্রতিমন্ত্রী নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন । এ বিষয়ে তার নিকট জানতে চাইলে
তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ
হাসিনা আমার ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। আজ আমি
দলীয় প্রতীক বরাদ্দ পেলাম। আমার মার্কা নৌকা। আমি বিশ্বাস করি এই নৌকা
মার্কা সকলের পরিচিত মার্কা। শুধু তাই নয়, নৌকা হলো উন্নয়নের মার্কা,
নৌকা হলো স্বাধীনতার মার্কা। নৌকা জাতির জনকের মার্কা। নৌকা হল জন নেত্রী
শেখ হাসিনার। যারা শেখ হাসিনাকে ভালো বাসে যারা নৌকা কে ভালো বাসে তারা
নৌকায় অবশ্যই ভোট দেবে। তিনি এ সময় আরো বলেন,নৌকা উন্নয়নের প্রতীক , তাই
মানুষ নৌকায় ভোট দিবেন। আমি খুবই খুশি আমার নির্বাচনী আসনে অনেকগুলো
প্রার্থী আছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংখ্যাও বেশি। এতে অবশ্যই নির্বাচনটা
উৎসবমুখর হয়ে উঠবে। দলীয় বিদ্রোহী যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন, তারাও
দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা মনোনয়ন না পেয়ে নৌকার বিরুদ্ধে
বিদ্রোহ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তারা কিন্তু দলের বড় বড় পদধারী
নেতাও। আমি মনে করি বিদ্রোহী, স্বতন্ত্র বা ডামি প্রার্থী যাই বলি না
কেন, কোনো দিকে মানুষ যাবে না। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষ
উন্নয়নের মার্কা হিসেবে, বঙ্গবন্ধুর মার্কা হিসেবে নৌকাকেই বেছে নিবেন।
এটা আমার বিশ্বাস।। এদিকে তার বিরুদ্ধে লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী
লীগের সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদ ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী
লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ধামসোনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ
সাইফুল ইসলামসহ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের
প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি এবারের স্বতন্ত্র প্রার্থী
তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদ বরাদ্দ পেয়েছেন ঈগল পাখি প্রতীক এবং ধামসোনা
ইউনিয়নের সদ্য পদত্যাগী সাবেক চেয়ারম্যান ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের
সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন।
তিনি বরাদ্দ পেয়েছেন ট্রাক প্রতীক। এছাড়াও এ আসন থেকে অপর ৭ জন প্রার্থী
হলেন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির আইরীন পারভীন, গণফ্রন্টের নুরুল আমীন,
তৃণমূল বিএনপির মাহাবুবুল হাসান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মিলন কুমার ভঞ্জ,
ন্যাশনাল পিপল্স পার্টির ইসরাফিল হোসেন সাভারী, বাংলাদেশ সুপ্রিম পাটির্র
মো: জুলহাস ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মো: সাইফুল ইসলাম মেম্বার
নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। তাদের প্রতীক বরাদ্দের বিষয়টি এ রিপোর্ট লেখার
সময় পর্যন্ত জানা যায়নি। অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী তালুকদার মো. তৌহিদ
জং মুরাদ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের শিমুলতলা এলাকায় এ নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন
করেন।জানা গেছে, হাজার হাজার নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মটর শোভাযাত্রা
সহকারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আমিনবাজার থেকে রেডিওকলোনী প্রদক্ষিণ করে
শিমুলতলায় এসে তার নির্বাচনী কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। এরপর তিনি অফিস
উদ্বোধন করে তার নির্বাচনী প্রতীক ঈগল মার্কার প্রচার প্রচারণার
কার্যাক্রম শুরু করেন এবং নির্বাচনীয় বক্তব্য দেয়। তিনি বলেন আমার
বিরুদ্ধে মিথ্যা ভাবে প্রচার করে আমাকে রাজনীতি থেকে দুরে রাখতে চেষ্টা
করেছে। রানা প্লাজার ঘটনায় আমার কোন হাত ছিল না মিথ্যা ভাবে আমার নামে
ফাঁসানো হয়ে। ভোটের মাধ্যমে প্রমান করবো আমার জন প্রীয়তা কত টুকু তা
প্রমান করবো। এছাড়া অপর সদ্য পদত্যাগী সাবেক চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র
প্রার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন,আওয়ামীলীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা সঙ্গে রয়েছে
অবশ্যই বিজয়ী হবো। আমি আপনাদের দোয়া ও সমার্থন চায়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী,
আগামী ৭ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ভোটগ্রহণ। প্রচারণা
চালানো যাবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত।সোমবার জেলার
রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে ভোটে অংশ নেয়া প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক
বরাদ্দ দেয়া হয়। তার পর থেকে শুরু হয়েছে এসব প্রার্থীর সরব প্রচারণা ও
কর্মী-সমর্থকদের দৌড়ঝাঁপ।এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৭ লাখ ৫৬ হাজার ৪১০ জন।
এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৪৬৩ জন ও মহিলা ভোটার ৩ লাখ
৬৮ হাজার ৯৪৭ জন।
|