বাংলাদেশি গৃহকর্মী আবিরন বেগম হত্যায় সৌদি আরবে একজনের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রিয়াদের ক্রিমিনাল কোর্ট এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে সৌদি গৃহকর্ত্রীর মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি গৃহকর্তার কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার রিয়াল জরিমানা করা হয়েছে। বাংলাদেশি গৃহকর্মীকে হত্যার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রধান আসামি ওই গৃহকর্ত্রীর নাম আয়েশা আল জিজানী। সুনির্দিষ্টভাবে ইচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করার কারণে তার বিরুদ্ধে রায় দেওয়া হয়।
আদালত রায়ে গৃহকর্তা বাসেম সালেমের বিরুদ্ধে আলামত ধ্বংসের অভিযোগ, আবিরন বেগমকে নিজ বাসার বাইরে বিভিন্ন জায়গায় কাজে পাঠানো ও চিকিৎসার ব্যবস্থা না করায় পৃথক পৃথক অভিযোগে মোট ৩ বছর ২ মাস কারাদণ্ডের আদেশ দেন ও ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা করেন।
আদালত অন্য আসামি সৌদি দম্পতির কিশোর পুত্র ওয়ালিদ বাসেম সালেমের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করার প্রমাণ পাননি বলে জানান। তবে আবিরন বেগমকে বিভিন্নভাবে অসহযোগিতা করায় তাকে সাত মাসের কিশোর সংশোধনাগারে থাকার আদেশ দেওয়া হয়। রায়ের বিরুদ্ধে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করার সুযোগ রয়েছে বলে আদালত জানান।
এর আগে আবিরনের মৃত্যুতে আদালত দুঃখ প্রকাশ করেন। হত্যার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করে সৌদি শরিয়া আইন অনুযায়ী যথাযথভাবে বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হবে বলেও আদালত উল্লেখ করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ রিয়াদের আজিজিয়ায় আবিরন বেগম সৌদি গৃহকর্ত্রীর নির্যাতনে মৃত্যুবরণ করেন যা পরবর্তীতে হত্যাকাণ্ড বলে হাসপাতালের ফরেনসিক রিপোর্টে জানা যায়।
রিয়াদের ক্রিমিনাল কোর্টের ৬ নম্বর আদালতে আবিরন বেগমের মামলা পরিচালনার জন্য রোববার দূতাবাসের শ্রম উইংয়ের প্রথম সচিব মো. সফিকুল ইসলাম ও আইন সহায়তাকারী সোহেল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য খুলনার আবিরন বেগম সরকারিভাবে গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সৌদি আরবের রিয়াদে গিয়েছিলেন ২০১৭ সালে। দুই বছর তিন মাস পরে গত বছর আবিরন লাশ হয়ে দেশে ফেরেন। লাশের সঙ্গে থাকা আবিরনের মৃত্যুসনদে মৃত্যুর কারণের জায়গায় লেখা ছিল- মার্ডার (হত্যা)।