স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই আমতলীতে বসছে পশুর হাট। নিরব উপজেলা প্রশাসন।
9, July, 2021, 1:24:30:AM
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার ঠেকাতে সরকার কঠোর লকডাউন দিয়েছেন। সরকারের সেই নির্দেশনার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে স্বাস্থ্যবিধি সম্পূর্ন উপেক্ষা করে প্রভাবশালী একটি মহল আমতলী উপজেলা শহর ও গ্রামের বিভিন্ন স্থানে পশুর হাট বসাচ্ছেন। ওই বাজারগুলোতে ভারতীয় সীমান্তবর্তী পশু ব্যবসায়ীরা আসায় ডেলটা ভেরিয়েন্ট ভাইরাস সংক্রামণের আশঙ্কা রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে পশুর হাট বসানোর খবর জেনেও তার কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই পশুর হাট বসাচ্ছেন প্রভাবশালী মহল। দ্রæত এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন সচেতন নারগরিকরা।
জানা গেছে, আমতলী পৌর শহর, চুনাখালী বাজার, গাজীপুর বন্দর ও কলাগাছিয়া বাজারে উপজেলা সর্ব বৃহৎ পশুর হাট। আমতলী পৌরশহরে বুধবার, গাজীপুর বন্দর ও কলাগাছিয়া বাজারে শুক্রবার ও চুনাখালী বাজারে শনিবার সাপ্তাহিক পশুর হাট বসে। এ হাটগুলোতে হাজার হাজার পশু এবং মানুষের সমাগম হয়। ওই হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে পশু ক্রয়-বিক্রয় হয়। কিন্তু একটি প্রভাবশালী মহল উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে হাট বসাচ্ছেন। এতে স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি উপেক্ষিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হওয়ায় দ্রæত প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পরার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে ভারতীয় সীমান্তবর্তী জেলা যশোর, সাতক্ষিরা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা, খুলনা ও পাবনাসহ এলাকার শতাধিক গরু ব্যবসায়ীরা ওই হাট গুলোতে এসে পশু ক্রয়-বিক্রয় করছেন। তাদের মধ্যে নেই স্বাস্থ্যবিধি কোন বালাই। ওই গরু ব্যবসায়ীদের কারনে দক্ষিনাঞ্চল তথা উপকুলীয় এলাকায় ডেলটা ভেরিয়েন্ট ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন সচেতন নাগরিকরা। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকার গরু ব্যবসায়ীরা হাটগুলোতে এসে মাস্ক ছাড়াই অহরহ চলাচল করে। তাদের মাস্ক পরিধান ও সামাজিক দুরত্ব মেনে চলতে বললেও তারা মানছেন না। দ্রæত এদের বিরুদ্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন সচেতন নাগরিকরা।
আমতলী পৌর শহরের পশুর বাজারে আসা ক্রেতা ইমরুল, শহীদুল ও জব্বার বলেন, পশুর হাটে প্রবেশের সুযোগ নেই। মানুষ গায়ে গায়ে মিশে গরু দেখাশুনা করছে। এদের মধ্যে করোনার ভয় নেই। তারা আরো বলেন, বাজার কমিটি স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। প্রশাসনের লোকজন দেখে না দেখার ভান করছে। দ্রæত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া জরুরী। বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, মানুষের মুখে মাক্স নেই, স্বাস্থ্যবিধির কোন বালাই নেই। গায়ে গায়ে মিলে গরু দেখাশুনা এবং ক্রয়-বিক্রয় করছে। বাজার কমিটি স্বাস্থ্যবিধি মানাতে তেমন পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
আমতলী পৌরসভা সচেতন নাগরিক ফোরামের সভাপতি অরসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক আবুল হোসেন বিশ^াস বলেন, স্বাস্থ্যবিধি সুরক্ষা না করেই উপজেলা প্রশাসন ও বাজার কমিটি পশুর হাট বসাচ্ছেন। এতে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সর্বত্র দ্রæত ছড়িয়ে আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আরো বলেন ভারতীয় সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর পশু ব্যবসায়ীরা অহরহ বাজারে এসে পশু ক্রয়-বিক্রয় করছেন। এতে ভারতীয় ডেলটা ভেরিয়েন্ট করোনা ভাইরাস দক্ষিনাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দ্রæত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তিনি।
আমতলী গরু হাটের ইজারাদার ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মোতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, পশুর হাট বসাতে কেভিনেটের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আমি স্বাস্থ্যবিধি মেনেই হাট পরিচালনা করছি।
আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) নাজমুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুর হাট বসানোর নির্দেশনা রয়েছে। তবে হাটে সামাজিক দুরত্ব রেখে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে শতভাগ মাস্ক পরিধান করে ক্রেতা-বিক্রেতাদের প্রবেশ করতে হবে। ক্রেতা-বিক্রেতা ছাড়া অন্য কেউ হাটে প্রবেশ করতে পারবে না। তিনি আরো বলেন, হাট ইজারাদারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে পশুর ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য সামাজিক দুরত্ব রেখে বাঁশের বেড়া দিয়ে দিতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।