চাঁদপুরে অঞ্জলী রানী হত্যাকাণ্ডে সন্দেহভাজন ৫ জনের আত্মসমর্পন
21, September, 2021, 2:43:34:AM
স্টাফ রিপোর্টার
গ্রামে হয়রানি বন্ধ করতে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানার অঞ্জলী রানী হত্যাকাণ্ডে পুলিশের সন্দেহভাজন তালিকার ৫ জন থানায় আত্মসমর্পন করেছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পরিবারের সদস্যদের পরামর্শে তারা স্বেচ্ছায় পুলিশের কাছে আত্মসমর্পন করেন।সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) আত্মসমর্পন করা ৫ জনকে অঞ্জলী রানী হত্যাকাণ্ডে আটক দেখিয়ে তাদের ডিএনএ’র পরীক্ষার আবেদন জানিয়ে আদালতে প্রেরণ করে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ প্রায় ১৫ মাস আগে নির্মমভাবে খুন হন এক নারী। বাড়িতে একা পেয়ে ঘাতকরা তাকে গলা কেটে হত্যা করে। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এরইমধ্যে বেশ কয়েকজনকে পুলিশ আটক করে। কিন্তু এখনো কোনো কিনারা করতে পারেনি। তবে আরও কয়েকজনকে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়। এদের মধ্যে সোমবার ৫ ব্যক্তি স্বেচ্ছায় থানায় আত্মসমর্পন করেছেন। এলাকাবাসী এবং অভিভাবকের মাধ্যমে তারা পুলিশের হাতে ধরা দেন।গতবছরের ২১ জুলাই রাতে ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামে খুন হন বিধবা অঞ্জলী রানী দাস (৬০)। এই ঘটনার পরের দিন নিহতের ভাই অমর কৃষ্ণ দাস বাদী হয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ মামলা তদন্তকালে ওই এলাকার আজাদ, রাসেল, গনি ও শাকিল নামে ৪ যুবককে আটক করে। এরপর তাদেরকে রিমান্ডে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ, ডিএনএ এবং ফিঙ্গার প্রিন্ট পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু তাতে কোনো প্রমাণ মেলেনি। পরে এই ৪ জন দীর্ঘ ৯ মাস জেল খেটে জামিনে মুক্তি পান।
এদিকে গত ৩ সেপ্টেম্বর উত্তম দাস ও আরিফ হোসেন নামে আরো দুজনকে আটক করে পুলিশ। এরমধ্যে তাদেরও ডিএনএ পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। বর্তমানে তারা জেল হাজতে রয়েছে।
অন্যদিকে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একই এলাকার আরও বেশ কয়েকজনকে সন্দেহের তালিকায় রাখে পুলিশ। পরে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সোহেল মাস্টার, বুলবুল আহমেদ, ইউপি সদস্য শাহআলম কিরণ, সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান ও খাজুরিয়া বাজারের ব্যবসায়ী মাসুদ আলম- থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে হত্যায় সন্দেহের তালিকায় থাকা ১২ জনের নাম সংগ্রহ করে এবং তাদের অভিভাবকদের নিয়ে পরামর্শ করে।
অভিভাবকদের সম্মতি নিয়েই ১২ জনের মধ্যে ৫ জন যথাক্রমে রেদাওয়ানুল হক সজিব, ফয়সাল হোসেন সুজন, খোকন মিয়া, বাবু হোসেন ও মাসুদ আলমকে থানা পুলিশের কাছে আত্মসমর্পন করে। পরে থানা পুলিশ তাদেরকে অঞ্জলী রানী দাস হত্যা মামলায় আটক দেখিয়ে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য অনুমতি চেয়ে আদালতে প্রেরণ করে।
এই নিয়ে স্থানীয় সোহেল মাস্টার, বুলবুল আহমেদসহ আরো কয়েকজন জানান, আমরা চাই হত্যাকাণ্ডের মূল আসামিদের আটকসহ তাদের বিচার হোক। একই সঙ্গে এলাকার মানুষ যাতে অযথা হয়রানি না হয়, সেই জন্যই অভিভাবকদের সম্মতি নিয়ে সোমবার এই ৫ জনকে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পন করানো হয়।
এই বিষয় ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শহিদ হোসেন জানান, অঞ্জলী রানী দাস হত্যাকাণ্ডে প্রাপ্ত ডিএনএ’র সঙ্গে ম্যাচিং এর জন্য আটককৃতদের ডিএনএ পরীক্ষা করাতে আদালতের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত ডিএনএ পরীক্ষা করে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হবো।