উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের বলদিয়াপাড়া মৌজার ৩৬৫ দাগের ১০ একর ও গড়ফতু মৌজার ৩০ দাগের ১৫ একর জমিতে বলদিয়াপাড়া বালুমহাল অবস্থিত। বালুমহালটি ইজারা নেন নয়ন কন্সট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী নুর-এ আলম সিদ্দিকী নয়ন। যার অন্তরালে রয়েছেন একজন অবসর প্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা। ঘাটটি ইজারা নেয়ার পর থেকে ইজারাদার প্রশাষনকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে ইজারার শর্তাবলী ভেঙ্গে অবাধে ১০ চাকার ড্রাম ট্রাক দিয়ে বালু সরবরাহ করছে। পাশাপাশি ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে নদী হতে বালু উত্তলন করছে।
ইতিপূর্বে এলাকাবাসী ১০ চাকার তিনটি ড্রাম ট্রাক আটক করে উপজেলা প্রশাসনকে সংবাদ দিলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট মোঃ ডালিম সরকার ঘটনা স্থলে গিয়ে ট্রাক ৩টিকে ভ্রাম্যমান আদালতে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এর কয়েকদিন ড্রাম ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকলেও অদৃশ্য খুটির জোরে পুনরায় দিন ও রাতে অবাধে চলছে ড্রাম ট্রাক। যাতে জনসাধারন চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
নয়ন কন্সট্রাকশনের সুপারভাইজার বিপ্লব জানায়, বালুমহালটি ইজারা নেয় অবসর প্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা আবু সাঈদ, কিন্তু লাইসেন্সটি হলো চিরিরবন্দর উপজেলার রানীবন্দর এলাকার প্রভাবশালী বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নয়ন কন্সট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী নুর-এ আলম সিদ্দিকী নয়ন এর। যার কারনে উনার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার মোঃ রাকিব হাসান বালুমহালটি সার্বক্ষনিক তত্ত্ববধান করেন। বালুমহালের সাইনবোর্ডে ম্যানেজিং পার্টনার হিসেবে ইঞ্জিনিয়ার মোঃ রাকিব হাসানের নাম উল্লেখ করা আছে।
বালুমহালের ম্যানেজিং পার্টনার ইঞ্জিনিয়ার মোঃ রাকিব হাসানকে বালুমহালে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা কিংবা ডাম্প ট্রাক দিয়ে বালু পরিবহনের অনুমোদন আছে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন অনুমোদন নাই। তারপরও কেন ব্যবহার করছেন এমন প্রশ্ন করা হলে শর্তাবলীতে যাই উল্লেখ থাক, এসব ব্যবহার ছাড়া বালুমহাল চালানো সম্ভব নয় বলে জানান। এসময় দিনাজপুরের সব বালুমহালেই এসব ব্যবহার করা হয় বলে দাবী করেন।
উল্লেক্ষ্য, দিনাজপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা বালু মহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি খালেদ মোহাম্মদ জাকী সাক্ষরিত ৪৬ টি শর্তাবলী সম্বলিত এক ইজারা বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক ৮ মার্চ ২০২১ ইং সরকার নির্ধারিত কাঙ্খিত দরপত্র দাখিলে বোলদিয়া বালু মহালের ইজারা গ্রহন করেন নয়ন কনস্ট্রাকশান। সে মোতাবেক বর্ণিত ইজারা ১ লা বৈশাখ ১৪২৮ বাংলা সন হতে ১ বছরের জন্য কার্যকর হলে ১৪ এপ্রিল ২০২১ ইং হতে এই বালু মহাল থেকে বালু উত্তোলন শুরু হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল কাদের জানায়, আমরা মনিটরিং করছি, মাঝে মাঝে সংবাদ পেয়ে সেখানে যেতে যেতে ট্রাক গুলি পালিয়ে যায়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়ীত্ব দেওয়া আছে, সংবাদ পেলেই ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
১০ চাকার ড্রাম ট্রাক চলাচলের কারনে সড়ক দূর্ঘটনার আশংকায় নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে। পাশাপাশি সড়কগুলি নষ্ট হতে শুরু হয়েছে। তাই তারা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর গণস্বাক্ষরিত অভিযোগ দাখিল করেও কোন উপকৃত না হলে স্থানীয় দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি’র আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।