বুধবার রাষ্ট্রপক্ষের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন) অনুমোদন করে এবং আসামিদের আপিল খারিজ করে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
২০১৭ সালের ২৮ মার্চ ঢাকার চার নম্বর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল ওই পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি আসামি মো. সবুজ খানকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। আসামিদের মধ্যে রাজু মুন্সি ও রাসেল মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলায় শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারানুম রাবেয়া মিতি।
আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এসএম শাহজাহান ও হেলাল উদ্দিন মোল্লা এবং দুই পলাতক আসামির পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী এসএম শফিকুল ইসলাম।
বিচারিক আদালতের রায় হাইকোর্ট বহাল রেখেছেন জানিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সামিরা বলেন, ট্রায়াল কোর্ট পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। এ রায়ই বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। দণ্ডিত আসামিদের মধ্যে রাজু মুন্সি ও রাসেল এ মামলার শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন।
২০১৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর পশ্চিম রামপুরায় নিজ বাসা থেকে আফতাব আহমেদের হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ৯ বছর আগে ডাকাতি করতে গিয়ে তাকে খুন করেন আসামিরা।
পরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা হলে দায় স্বীকার করে হুমায়ুন কবির, হাবিব হাওলাদার ও বিল্লাল হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ওই জবানবন্দিতে তারা স্বীকার করে, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আফতাব আহমেদের বাসায় ডাকাতি করার সময় তাকে গামছা দিয়ে বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করে তারা।
আসামি বিল্লাল হোসেন কিসলু আফতাব আহমেদের বাসার ড্রয়ার ভেঙে ৭২ হাজার টাকা লুট করে। পরে তারা স্থানীয় বউবাজার এলাকায় গিয়ে এক জায়গায় এ টাকা ভাগাভাগি করে নেয়।
পরে ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ প্রবীণ সাংবাদিক আফতাব আহমেদ হত্যা মামলায় ওই পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার চার নম্বর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান সরদার।
পরে নিয়মানুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য নথি (ডেথ রেফারেন্স) হাইকোর্টে পাঠনো হয়। পাশাপাশি আসামিদের পক্ষ থেকে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। মঙ্গলবার এ বিষয়ে শুনানি শেষ হলে বুধবারের রায়ে বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখলেন উচ্চ আদালত।
২০০৬ সালে একুশে পদক পাওয়া আফতাব দীর্ঘদিন ইত্তেফাকের জ্যেষ্ঠ আলোকচিত্রী হিসাবে কাজ করেন। আফতাব আহমেদের গ্রামের বাড়ি রংপুরের গঙ্গাচড়ায়। আলোকচিত্র সাংবাদিক হিসাবে তিনি ইত্তেফাকে যোগ দেন ১৯৬২ সালে।