পঞ্চগড়ে ঘরে ঘরে পতাকা বিলাচ্ছেন নারী মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া
24, March, 2021, 11:25:39:PM
মো. বাবুল হোসেন পঞ্চগড় , পঞ্চগড়:
২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তি উপলক্ষ্যে ঘরে ঘরে জাতীয় পতাকা পৌঁছে দিচ্ছেন পঞ্চগড়ের একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া বেগম। একই সাথে তিনি শিশুদেরকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনান।
গত কয়েকদিন থেকেই রোকেয়া বেগমের এ কার্যক্রম চললেও বুধবার দুপুর থেকে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেন।
এদিন পঞ্চগড় জেলা শহরের রওশনাবাগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করা হয়। এসময় তিনি স্থানীয় শিশু ও শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনান। সবার হাতে তুলে দেন লাল সবুজের পতাকা।
এতে উপস্থিত ছিলেন- জেলা মহিলা আ. লীগের সভানেত্রী রেজিয়া ইসলাম, বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষিকা সাদেকা আক্তার জাহান, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তোফায়েল ইসলাম তরুন।
মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানাতেই এ উদ্যোগ নিয়েছেন রোকেয়া বেগম। এছাড়া মহান স্বাধীনতা দিবসের দিন যারা পতাকা ও ফেস্টুন নিয়ে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানাতে পারে না তাদের মাঝে তিনি তার নিজ উদ্যােগে জাতীয় পতাকা, ফেস্টুন ও মাস্ক বিতরণ করছেন। তিনি তার নিজ হাতে শিশু ও শিক্ষার্থীদের হাতে এসব তুলে দিচ্ছেন।
জেলার একমাত্র এই নারী বীরমুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া বেগমের বাড়ি তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের মুনিগছ এলাকায়। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মাত্র ১৫ বছর বয়সে ১৯৭১ সালের পঞ্চগড়ের একমাত্র নারী হিসেবে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।
জাতীয় পতাকা ও ফেস্টুন পেয়ে আনন্দে উল্লাসিত শিশুরা। তারা জানান, আমরা বীরমুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া বেগমের কাছে আজ মুক্তিযু্দ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর জীবন কাহিনী জানতে পারলাম। তিনি আমাদেরকে পতাকা ও ফেস্টুন হাতে তুলে দিয়েছে এতে আমাদের অনেক ভালো লাগছে। আমরা এই পতাকা হাতে নিয়ে মাথায় ব্যাছ বেঁধে স্বাধীনতা দিবস পালন করবো।
মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া বেগম বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেই৷ সে সময় একজন নারী হয়ে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি৷ কিন্তু স্বাধীনতার মাত্র ৫০ বছরে এসে দেখতেছি অনেক শিশু ও নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সম্পর্কে জানে না এবং অনেকেই আছে পতাকা কেনার সামর্থ্য নেই। তাই আমি উদ্যােগ নিয়েছি জেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযু্দ্ধের গল্প শুনাবো এবং জাতীয় পতাকা ও ফেস্টুন বিতরন করবো। আমি যতদিন বেঁচে থাকবো এ কাজ করে যাবো।’
এবিষয়ে জেলা মহিলা আ. লীগের সভাপতি রেজিয়া ইসলাম বলেন, ‘বীরমুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া বেগম আমাদের পঞ্চগড়ের নারীদের গর্ব ও অহংকার৷ তিনি নারী হয়েও মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেছেন। তিনি যে উদ্যােগ নিয়েছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। তার এমন উদ্যােগে আমাদের নতুন প্রজন্মসহ আমরাও স্বাধীনতার ইতিহাস জানতে পারছি।